ইবি ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, সন্দেহ বড় বোনের স্বামী

শৈলকুপা প্রতিনিধি- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির (২৪) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ তার বড় বোনের সাবেক স্বামীর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তিন্নি লজ্জায় আত্মহত্যা করেছেন।

 

শুক্রবার (০২ অক্টোবর) মধ্যরাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি এ ঘটনা ঘটে। শেখপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর কন্যা তিন্নি ইসলামী ইউনিভার্সিটির হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী।

 

নিহতর খালাতো ভাই মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নির বড়বোন মিন্নির একই গ্রামের পুনুরুদ্দীনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় ৬/৭ বছর আগেই মিন্নির সাথে জামিরুলের বিচ্ছেদ ঘটে। মিন্নিকে সে আবার ঘরে নিতে চায়। কিন্তু মিন্নি রাজি না হলে দীর্ঘদিন ধরেই লম্পট জামিরুল পরিবারটির উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বাড়িটিতে কোন পুরুষ সদস্য না থাকায় পরিবারটি এক রকম জামিরুলের নির্যাতনে অসহায় হয়ে পড়ে।

 

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল শেখপাড়ায় তিন্নিদের বাড়িতে লোকজন নিয়ে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। দুই ঘন্টা পর আবারো জামিরুল ওই বাড়িতে যায় এবং তিন্নির উপর নির্যাতন চালায়।

 

বড় বোন মিন্নি অভিযোগ করেন, বাড়ির দোতালায় তিন্নির সঙ্গে জামিরুল আচরণ এমন কি করেছে যে, মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তরতাজা বোনের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখলাম। তিনি অভিযোগ করেন এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমার বোনের সঙ্গে খারাপ কিছু করায় সে আত্মহত্যা করেছে।

 

তিন্নির মা হালিমা বেগম জানান, আমার মেয়ে খুবই মেধাবী। বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিল। ঘটনার দিন সে সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া থেকে এক বান্ধবির বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জামিরুলের হুমকীর শিকার হয় তিন্নি। আমাদের সন্দেহ তিন্নিকে পাশবিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে।

 

বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম জানান, তিন্নির মৃত্যুটি রহস্যজনক। তার সঙ্গে এমন কিছু করা হয়েছে যে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ডাক্তারী পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চত হওয়া যাবে।

 

সহকারী পুলিশ সুপার জানান, তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। একজন মেধাবী ছাত্রীর এমনভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টির উপর কঠোর নজর রাখছি। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তার বড় বোনের সাবেক স্বামী জামিরুল নজরদারীতে রয়েছে। সে দোষী হলে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

 

তিনি বলেন, লাশ শুক্রবার বিকালে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে শেখপাড়া বাজারে আনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *