উজ্জ্বল অধিকারী, বেলকুচি প্রতিনিধি- সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে যমুনা হাসপাতাল (ক্লিনিক) কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সমেশপুর গ্রামে যমুনা হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হলেও সুস্থ রয়েছেন নবজাতক শিশু।
নিহত মমতা বেগম (৩২) বেলকুচি রাজাপুর ইউনিয়নের সমেশপুর গ্রামের আজিজুল রহমানের স্ত্রী। এদিকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় টাকার বিনিময়ে রফাদফা করেন রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিহতের স্বামী আজিজুল জানায়, প্রসব ব্যাথা অনুভব করলে শনিবার সকালে আমার স্ত্রী মমতাকে যমুনা হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে বিকালে ডাঃকমল কান্তি দাশ প্রসূতির সিজার অপারেশন করেন। মমতা বেগম একটি সন্তানের জন্ম দেয়। অপারেশনের পর রোগীকে বেডে স্থান্তান্তর করে দেয়। ১ দিন রোগীর অবস্থা ভালো ছিলো। রবিবার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে পানি খাওয়াতে বলে, পরে আমি মাম পানি এনে দেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পানির সাথে স্যালাইন মিশিয়ে খাওয়ানোর পরপরই রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আমার স্ত্রী আগে কখনো শাসকষ্টের সমস্যা ছিলো না। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা এসে রোগীকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত রোগীকে উন্নত চিকিৎসার পরার্মশ দেয়। উন্নত চিকিৎসা জন্য রওনা হলে রাস্তায় মারা যান।
এদিকে রোগী মৃত্যুর খবর পেয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় জমায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও রোগী মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে বৈঠকে বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে স্বজনদের সাথে মৃত্যুর ঘটনা রফাদফা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালনা পরির্ষদের সদস্য খোকনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মমতা নামের যে রোগী মারা গেছে তাতে আমাদের কোন হাত নেই। তার পূর্ব থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। সিজারের ২৪ ঘন্টা পর রোগীকে হালকা পানি জাতীয় খাবার দেওয়ার কথা বললে তার স্বামী ফ্রিজের পানি পান করায়। তার প্রেক্ষিতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। আমরা রোগী অবস্থার সংকটাপন্ন দেখে তার পরিবারকে উন্নত চিকিৎসা দেবার পরামর্শ দেই। পরে জানতে পারি সে মারা গেছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৬ মাস পূর্বে অবস্থাপনা ও অপচিকিৎসার জন্য যমুনা হসপিটালকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস কর্তৃক সিলগালা করা হয়। এর পরও তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছিল।