নজর২৪ ডেস্ক- কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে মারাত্মক সামাজিক এবং পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হয়েছে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশন (জিসিএ) এর সঙ্গে বাংলাদেশ ভার্চুয়াল ক্লাইমেট ভ্যালেনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিভিএফের বর্তমান সভাপতি হিসাবে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জিসিএ চেয়ারম্যান বান কি মুন সিভিএফ দেশগুলোর রাষ্ট্রপতি এবং সরকার প্রধান, যুক্তরাজ্য এবং ইতালি (সিওপি-এর হোস্ট এবং সহ-হোস্ট), নেদারল্যান্ডস, সিভিএফ থিম্যাটিক রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা আমাদের সময়ের বিশ্বে পরিবেশগত ক্ষতির চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবগুলো আমাদের সভ্যতার ক্ষতি করছে, আমাদের গ্রহকে ধ্বংস করছে এবং আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। আমরা, সিভিএফ নেতারা এবং আমাদের অংশীদারগণ, ২০২০ সালে এনডিসি বর্ধনের সময়সীমার আগে জলবায়ু জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় জরুরি এবং শক্তিশালী বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হয়ে সম্মানিত হয়েছে। সিভিএফ বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল দেশের এক বিলিয়ন মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে। বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে তুচ্ছ অবদানের পরেও সিভিএফ দেশগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সভাপতি হিসাবে, আমাদের ফোকাস বিশ্ব তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি নীচে অব্যাহত রাখা, অর্থায়ন ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার কথা তুলে ধরে। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত একটি ইউএন স্পেশাল রেপার্টার নিয়োগ এবং একটি সিভিএফ এবং ভি-২০ যৌথ মাল্টি-ডোনার তহবিল তৈরির ওপরও জোর দেব।
বাংলাদেশ ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশনের জন্য দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অফিস চালু করে ১৯ সেপ্টেম্বর।
আমার দেশ এই বর্ষায় বারবার বন্যার মুখোমুখি হচ্ছে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে এবং বিশাল মানুষকে বাস্তুচ্যুত করছে। গত মে মাসে সুপার ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাব এবং বর্তমান কোভিড -১৯ মহামারীর কারণে পরিস্থিতি আরও বেড়ে যায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্তমান ক্ষতি কমিয়ে আনতে প্যারিস চুক্তির কঠোর বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকারের শুধু প্যারিস চুক্তির আওতায় জাতীয় অবদানে সন্তুষ্ট থাকা উচিত হবে না। তাদের লক্ষ্য ও অবদান আরো বাড়ানো দরকার। জলবায়ু ও পৃথিবীর জন্য ‘ক্লাইমেট জাস্টিস’ ধারণাটি অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
প্রযুক্তিতে প্রবেশ সুবিধার পাশাপাশি অর্থায়নে বড় অর্থনীতির দেশগুলো, মাল্টিলেটারাল উন্নয়ন ব্যাংকস (এমডিবি) ও আর্ন্তজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (আইএফআই) আরো জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। লোকসান ও ক্ষতি মোকাবিলায় আরও সাহসী পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি। দুর্যোগ প্রশমন, অভিযোজন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও পুনরুদ্ধারে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রতিবছর কমপক্ষে ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।#