অনিয়ম ও দুর্নীতির অ’ভিযোগে সোনাগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

আবদুল্লাহ রিয়েল, ফেনী প্রতিনিধি: ত্রাণ বিতরনে অনিয়ম, কাজ না করে অর্থ উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি খাল ইজারা প্রদান ও মাদক সেবনের অভিযোগে ফেনীর সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আরেফিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

 

শামছুল আরেফিন সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইফতেখার আহমদ চৌধুরী ৬ অক্টোবর এ বিষয়ে লিখিত আদেশ জারি করেন।

 

এর আগে গত ১৭ মে আয়োজিত একটি বিশেষ সভায় সোনাগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল আরেফিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার ১২ ইউপি সদস্য আব্দুস ছালাম খোকন, ইমাম উদ্দিন গঠন, তাজুল ইসলাম ফরিদ, মঞ্জু রানী দেবী, সফি উল্যা, জোসনা আরা, নুর ইসলাম, মোশারফ হোসেন শেখ, মো: আব্দুল্যাহ, নুরেন নাহার, আবু বক্কর সিদ্দিক, আব্দুস সালাম অনাস্থা আনেন।

 

অনাস্থা প্রস্তাবে লিখিত অভিযোগগুলো হলো- মাসিক উন্নয়ন বৈঠক না করে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহন করে চেয়ারম্যান, সরকারি ত্রানসামগ্রী ওয়ার্ড পর্যায়ে সমভাবে বন্টন না করে চেয়ারম্যান ত্রানের প্যাকেট তার বাড়িতে নিয়ে যায়, করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় পরিষদের জন্য বরান্ধ ৮৬৫ টি বিশেষ কার্ডের মধ্যে চেয়ারম্যান এককভাবে ১৫০টি কার্ড নিজের কাছে রেখে নিয়ম ভঙ্গ করে নিজের লোকদের মধ্যে বন্টন করেন, প্রায়সময় চেয়ারম্যান মাদক গ্রহন ও সেবন করে পরিষদের সদস্যসহ আগত সেবাগ্রহিতার গালমন্দ করে পরিষদের সুনাম নষ্ট করছে, গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর প্রদানে অসহায়দের কাছ থেকে ২৫/৩০ হাজার টাকা হারে আদায় করেন চেয়ারম্যান, সরকারি টিউবওয়েল প্রদানে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জনসাধারনের কাছ থেকে ১৫/২০ হাজার টাকা আদায় করেন এবং অনেকের কাছ থেকে টিউবওয়েল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার পরও টিউবওয়েল প্রদান করেননি, গড়ে ৩/৪ হাজার টাকার বিনিময়ে বষস্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার কার্ড প্রদান করেন, ২০১৮-১৯ সালের সরকারের রাজস্ব তহবিলের ১% বরাদ্ধের ৪/৫টি প্রকল্পের কাজ না করে টাকা আত্মসাত করেন এবং দুর্নীতি অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নতুন করে টাকা ছাড় না দেওয়াতে পরিষদের উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শিল্প জোনের জন্য অধিগ্রহণকৃত ইউনিয়নের অন্তর্গত ভূমি চট্রগ্রামের জেলার ভূমিদস্যুদের কাছে লীজ প্রদান করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে কয়েকজন সদস্যকে চেয়ারম্যানের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা লাঞ্চিত করে।

 

এ বিষয়ে ফেনীর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগগুলো অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তদন্তের পর তদন্ত রিপোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়।

 

ফেনীর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মন্জুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম ও মেম্বারদের অনাস্থার ঘটনা সরেজমিন তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *