নজর২৪, ঢাকা- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, যেই বিচার ব্যবস্থা একটি ঘটনার বিচার করতে দীর্ঘ সময় নেয়, সেই বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমরা ধিক্কার জানাই। যে বিচার ব্যবস্থা মানুষের অধিকার রক্ষা করতে পারে না, সেই বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমরা ঘৃনা প্রকাশ করি। যেই বিচার বিভাগ একজন প্রধান বিচারপতিকে রক্ষা করতে পারে না, তাদের প্রতি জনগণের আস্থা নেই।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত পদযাত্রা শুরুর পূর্ব মুহূর্তে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্রসফায়ারকে সরকার ক্ষমতায় থাকার একটি পন্থা হিসেবে বেঁছে নিয়েছে মন্তব্য করে নুর বলেন, ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা বলেছেন যারা ধর্ষণের সাথে জড়িতে তাদের আমরা ক্রসফায়ার দিতে চাই। আমি বলবো আপনাদের মতলব ভালো না। ক্রসফায়ারের নাম করে আপনারা এ পর্যন্ত তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই একদম নিরাপরাধ নিরীহ মানুষ। মূলত এই ক্রসফায়ারকে ক্ষমতায় থাকার একটি পন্থা হিসেবে বেঁছে নিয়েছে তারা।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, একটার পর একটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, সর্বশেষ সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা ঘটলো। কিন্তু ঘটনাগুলোর কোনো বিচার হচ্ছে না। আমরা খুব লজ্জিত হই যখন আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- ধর্ষণের ঘটনা কোন দেশে না ঘটে। এসব কথা বলে বাংলাদেশে ধর্ষণের বৈধতা দিতে চায়।
নুর বলেন, আজকে এখানে আপনারা যারা তরুণরা দাঁড়িয়ে আছেন তারা একদিন বাবা হবেন। এসব ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে আপনার সন্তানরাও নিরাপদ থাকবে না। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন কিছুদিন আগে আইন ও শালিস কেন্দ্র বলেছে- গত আট মাসে ৮৮৯ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ১১১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই যে ১১১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলো, এর মধ্যে কয়টি ঘটনার বিচার হয়েছে?
তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়। যেখানে আইনে বলা আছে- ৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার করতে হবে। কিন্তু এই ধর্ষণের বিচার হতে কয়েকবছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
ভিপি নুর বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বলেছিল, স্বাধীনতাবিরোধী যারা তারা ছাড়া অন্য কেউ যদি ধর্ষণের শিকার হয় তবে তাদের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগ মাঠে থাকবে। আমার প্রশ্ন- আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী আছে? তাহলে স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে যারা ধর্ষণকে বৈধতা দিতে চায়- তাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। না হলে আমাদের মা-বোনরা এ দেশে স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা পাবে না।’