সাইফুর-অর্জুনকে দেখেই ‘জানোয়ার, জানোয়ার’ বলে শ্লোগান

নজর২৪ ডেস্ক- সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টা ৪০ মিনিট। কড়া পুলিশ প্রহরায় প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে নিয়ে আসা হয় সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করকে। দুজনই এমসি কলেজে তরুণী ধর্ষণ মামলার আসামি। এর মধ্যে সাইফুর প্রধান আসামি। আদালতে হাজির করার আগেই আদালত চত্বরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।

 

সাইফুর ও অর্জুনকে আদালত চত্বরে হাজির করার পর পুলিশী নিরাপত্তার মধ্যেই বিক্ষোভ করেন উপস্থিত জনতা। এই দুই আসামিকে নিয়ে আসার পর আদালতে চত্বরে শতাধিক জনতা জড়ো হন। তারা দুই আসামিকে দেখা মাত্রই ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’ শ্লোগান শুরু করেন। ‘জানোয়ার, জানোয়ার’ বলেও শ্লোগান দিতে দেখা যায় অনেককে। কেউ কেউ ‘মার, মার’ বলেও হাঁক দেন। তবে পুলিশ তৎপর থাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

 

আরও পড়ুন- সিলেট আদালতে ধর্ষকদের পক্ষে দাঁড়াননি কোন আইনজীবী

 

জনতার এই ক্ষোভের মধ্যেই পুলিশ নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে সাইফুর ও অর্জুনকে সিলেট মহানগর হাকিম ২য় আদালতে হাজির করে। আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক সাইফুর রহমান তাদের ৫ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। সন্ধ্যায় তাদের কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ছয়-সাত নেতাকর্মী। এরপর দুইজনকে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা। খবর পেয়ে রাতে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

 

রোববার দুপুরে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে জবানবন্দি দেন নির্যাতিত গৃহবধূ। এরপর তাকে আবার হাসপাতালে নেয়া হয়।

 

আরও পড়ুন- ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: এবার মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি ৫ দিনের রিমান্ডে

 

এ ঘটনায় শনিবার ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন গৃহবধূর স্বামী। পুলিশ রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে সাইফুর রহমান ও হবিগঞ্জের মাধবপুরের মনতলা থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করে। তারা দুজনই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

এ ঘটনায় করা মামলায় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনিপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল হাসান (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাত আর তিনজনকে আসামি করা হয়।

 

এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও পলাতক মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫) ও তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮)। তাদের গ্রেফতারে মাঠে কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *