সপ্তাহ না যেতেই উঠে যাচ্ছে ১৯ কোটি টাকার রাস্তার কার্পেটিং

নজর২৪ ডেস্ক- ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-ডাকবাংলা সড়ক নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২২ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই উঠে যাচ্ছে পিচ।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, চার কিলোমিটার রাস্তায় পিচ ঢালাই দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঢালাইয়ের পাঁচ দিনের মাথায় কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তার ঢালাই উঠে যাচ্ছে, খোয়া সরে যাচ্ছে। স্থানীয়রা সড়কের পিচ ও খোয়া হাত দিয়েই উঠিয়ে ফেলতে পারছেন।

 

যদিও ঠিকাদারের দাবি, বৃষ্টির মধ্যে অল্প কিছু অংশে রাস্তার কাজ করার কারণে এমনটি হয়েছে। রাস্তা তৈরির তিন বছরের মধ্যে কোনো ক্ষতি হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা ঠিক করে দেবে বলে উল্লেখ করেন ঠিকাদার।

 

জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ডাকবাংলো পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতিসহ ওয়ারিংয়ের কাজ চলছে তিন বছর ধরে। এক সপ্তাহ আগে কালীগঞ্জ নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চার-পাঁচদিনে চার কিলোমিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরপর বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথাও বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে তা সম্পূর্ণ উঠে যাবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

 

টেন্ডারে রাস্তার কাজ পান খুলনার মুজাহার ইন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। কিন্তু হাতবদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া। টেন্ডার শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। রাস্তা খোঁড়া এবং ইট-বালুর কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগেই। সম্প্রতি শুরু হয়েছে কার্পেটিংয়ের কাজ।

 

সড়কটির কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে এমনটি হয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী সড়কে কাজ সম্পন্নের তিন বছরের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুনরায় তা মেরামত করবে। বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে রাস্তার সমস্যা হয়েছে। কাজ শুরু হলে আগে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের কাজ করা হবে।

 

এদিকে ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম মিয়া রাস্তার কাজে কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে বলেন, যেখানে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে, সেখানে টিউবওয়েলের পানি যায়। যে কারণে এমনটি হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে কাজ করায় ৩০০ মিটারের মতো রাস্তার সমস্যা হয়েছে। আমি লোক পাঠিয়েছে সেখানকার কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা পুনরায় করা হবে বলে।

 

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হায়দারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ম্যাসেজ পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *