নজর২৪ ডেস্ক- বিয়ের প্রলোভনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক ছাত্রীকে ১০ বছর ধরে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ওই ছাত্রীর বাবা পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম এমএ কাইয়ূম। তিনি উপজেলার চরতেরটেকিয়া গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। চরতেরটেকিয়া মৌজা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তিনি।
ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ছাত্রীটি ওই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি একটি কলেজে ডিগ্রি ২য় বর্ষে মানবিক শাখায় অধ্যয়নরত। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বিদ্যালয়টির সহাকরী শিক্ষক এমএ কাইয়ূমের কাছে প্রাইভেট পড়তেন তিনি। তখন থেকেই ছাত্রীটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই শিক্ষক। পরে কাইয়ূম বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
বিষয়টি টের পেয়ে তিন বছর আগে ছাত্রীটিকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন তার পরিবার। কিন্তু এতেও ছাত্রীর পিছু ছাড়েননি কাইয়ূম। ছাত্রীর মুঠোফোনে তার যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। পুনরায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ছাত্রীটিকে ফুসলিয়ে ও তোষামোদ করে ওই শিক্ষক তার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে ফের রাত্রি যাপন করেন তিনি। সকালে ছাত্রীটি বিয়ের জন্য শিক্ষককে চাপ দিলে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান কাইয়ূম।
কোন উপায়ান্তর না দেখে ছাত্রীটি ওই দিন থেকেই বিয়ের দাবিতে বিষের বোতল হাতে শিক্ষকের বাড়িতে গত ছয় দিন ধরে অবস্থান করছেন। বিয়ের দাবি বাস্তবায়ন না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
খবর পেয়ে ছাত্রীটির বাবা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কাইয়ূমের বাড়িতে উপস্থিত হন। কাইয়ূমের বাবা নুরুজ্জামানকে চাপ দিলেও তিনি ওই ছাত্রীকে বিয়ে করাতে রাজি হচ্ছেন না। পরে মঙ্গলবার বিকেলে পাকুন্দিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার বাবা।
ওই ছাত্রীর বাবা জানান, আমার মেয়ে ওই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় কাইয়ূমের কাছে প্রাইভেট পড়ত। এই সুযোগে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন কাইয়ূম। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেই। সেখানেও মেয়েটিকে সুখে থাকতে দেয়নি কাইয়ূম। ফুসলিয়ে একটি সংসার ভেঙ্গে মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে মেয়েকে বাড়িতে রেখেই তিনি পালিয়ে যান। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কাইয়ূমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পাকুন্দিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মো: মফিজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটি বর্তমানে ওই শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান করছে। আমাদের পুলিশও সেখানে আছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।