রায়হান হ;ত্যা: অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কেন গ্রেপ্তার নয়?

নজর২৪ ডেস্ক- গত রোববার (১১ অক্টোবর) ভোরে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে মারা যান আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান আহমদ (৩৩)। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই অভিযোগ করা হচ্ছে, পুলিশের নির্যাতনে রায়হান মারা গেছেন। রায়হানের পরিবারকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করা হয়েছিলো বলেও অভিযোগ তাদের।

 

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে রোববার রাতেই সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ আনা হলেও কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

 

এদিকে, রায়হান হত্যার ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠনের পর বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াসহ ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্থ ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

 

এদিকে, প্রশ্ন ওঠেছে হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সত্ত্বেও কেনো অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। কেনো তাদের মামলার আসামি করা হচ্ছে না এই প্রশ্নও ওঠেছে।

 

এরআগে গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে গুলি করে হত্যা করা হয় সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে। এ ঘটনায় সিনহার বোনের দায়ের করা করা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশকে আসামি করা হয়। তাদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। তবে রায়হান হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি।

 

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, সাময়িক বরখাস্ত বা প্রত্যাহার কোনো শাস্তি নয়। কিছুদিন পরই আবার তাদের অন্যত্র পদায়ন করা হবে। এই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা খুবই গুরুতর। তাদের এই মামলায় আসামি করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন। না হলে তদন্ত কার্যক্রমই বাধাগ্রস্থ হবে।
বিজ্ঞাপন

 

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার জানিয়েছেন, রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শাহরীয়ার আল মামুনকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কতোয়ালি থানার সহকারি কমিশনার নির্মল চক্রবর্তী ও বিমানবন্দর থানার সহকারী কমিশনার প্রবাস কুমার সিংহ।

 

তিনি জানান, এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই বন্দরবাজার ফাঁড়ির ৪ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৩ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা চার পুলিশ সদস্য হচ্ছেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহারকৃত তিন পুলিশ সদস্য হচ্ছেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।

 

অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, এই ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু আইনে কতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলা তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন কতোয়ালি থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) বাতেন। তদন্তে পুলিশের কোনো সদস্যের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের মামলার আসামি করে গ্রেপ্তার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *