নজর২৪ ডেস্ক- কয়েক দিন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ আরও কিছু মাধ্যমে একটি খবর শেয়ার হতে দেখা যাচ্ছে।
নাইজেরিয়ার এক ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী সেই ব্যাংকের কর্মকর্তা হয়েছেন। বিষয়টিকে খুব ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা নানা ধরনের অনুপ্রেরণামূলক কথা লিখছেন।
দেশে বিষয়টি হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়েছে। মাধ্যমগুলোতে বিষয়টি শেয়ার করা ব্যক্তিরা ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীর ভাগ্য কীভাবে মুহূর্তেই পরিবর্তন হয়েছে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ে সেটি বলতেও ভুলছেন না।
ভাইরাল হওয়া ছবি ও কনটেন্টের সত্যতা জানার চেষ্টা করে নিউজবাংলা। ইন্টারনেটের সহায়তায় বেশ কিছু নিউজ লিংক পাওয়া যায় ঘটনাটির।
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার সেই ঘটনা বর্ণনা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা। আইয়োমাইড বাবালোলা মি নামের ওই কর্মকর্তা ফেসবুকে ঘটনাটি জানান।
নাইজেরিয়ার নিউজপোর্টাল নেপচুনপ্রাইম ডটকমে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে একটি খবর প্রকাশ হয়।
সেখানে বাবলোলা লেখেন, নিরাপত্তাকর্মী ইদ্রিস তাকে বলেছিলেন তার ওএনডি সার্টিফিকেট রয়েছে।
বাবলোলা বলেন, ‘নিরাপত্তাকর্মী তার চাকরির নিশ্চয়তা চাচ্ছিলেন। সে জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তার খালি পদে নিয়োগের ব্যাপারে তাকে আমি সহায়তা করার কথা জানাই। এরপর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নেয়া হয়।‘
পরের এক সপ্তাহের ঘটনা বর্ণনা করেন বাবালোলা। তিনি লেখেন, ‘এক সপ্তাহের ঘটনা পুরোটাই অলৌকিক মনে হবে।’
এরপর এক সপ্তাহের ঘটনা তিনি শেয়ার করেন।
‘২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আমি এক্সওয়াইজেড শাখায় কাজ শুরু করি। আমি সেদিন থেকেই ইদ্রিসকে লক্ষ্য করে আসছি। ‘আপনি কখনোই তার স্মার্টনেসকে এবং তার সেনাসদস্যের মতো গ্রাহক ও কমকর্তাদের স্যালুট দেয়াকে হেলা করতে পারবেন না।’
কয়েক মাস পরে ইদ্রিস আমাকে অনুরোধ করেন তার কিছু কথা শোনার। তিনি বলেন, ‘আমার ওএনডি সার্টিফিকেট রয়েছে এবং আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি নেয়ার জন্য পার্টটাইম পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি।
‘আমি তার কথা শুনে খুব অভিভূত হই এবং তাকে উৎসাহিত করি।’
‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আমাদের এক কর্মকর্তার পদন্নোতি হয় এবং অন্য স্থানে বদলি হন। এরপর সেই পদ খালি হলে ইদ্রিস আমাকে এসে তার আগ্রহের কথা জানান। সেই পদের জন্য তিনি যোগ্য বলেও জানান। আমার অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি ভালো দল তৈরি করা।
‘এরপর থেকে আমি এই শাখার সব নিরাপত্তাকর্মীর সেশন নেয়া শুরু করি। তাদের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাই। এতে তারা আরও স্মার্ট হয়ে ওঠেন এবং আমরা আমাদের কেপিআই পূরণ করতে সক্ষম হই।’
বাবালোলা বলেন, ‘এরপর আমাদের শাখায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়, সেখানে ইদ্রিস আবেদন করেন। প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষাও নেয়া হয়। তারপর মৌখিক পরীক্ষা। সবই করা হয় এক সপ্তাহের মধ্যে। সেখানে ইদ্রিস প্রথম স্থান লাভ করেন।
‘আমি দুটি ছবি দিয়েছি, এর একটি ইদ্রিসের ব্যাংকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে ছিল শেষ দিন। দিনটি ছিল শুক্রবার। পরের আরেকটি ছবি, যেটি সোমবার তোলা; সেদিন ইদ্রিস কর্মকর্তা হিসেবে ওই একই শাখায় যোগ দিয়েছেন।’
এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। এর কিছুদিন পর বাবালোলাকে সেই ব্যাংক থেকে অন্য আরেক শাখায় বদলি করা হয়।
বাবালোলা লেখেন, ‘ইদ্রিস, আপনি কোথায় ছিলেন সেটি বড় কথা নয়, আপনি এখন কোথায় সেটি দেখুন।
‘আমি সব সময় বলি, সফলতা হচ্ছে যেখানে আপনার প্রস্তুতি এবং সুযোগ এক হয়ে যায়। ‘আশা করছি আমাদের দেখা হবে আরও শীর্ষ অবস্থানে।’