বগুড়া প্রতিনিধি: পাহাড়ী ঢলে ও সপ্তাহব্যাপী অবিরাম বৃষ্টিতে বাঙালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে খামারকান্দি ইউনিয়নের ঘোড়দৌড় এলাকায় নিম্নাঞ্চলের ৩শ বিঘা কৃষি আবাদি জমি।
আবাদি জমির ফসল বাঁচাতে প্লাবিত ৩টি গ্রামের ২০/২৫ জন কৃষক ও যুবসমাজ তাদের নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করে ১০টি শ্যালো মেশিন লাগিয়ে ১১দিন যাবত সেচের মাধ্যমে ফসল রক্ষার প্রানান্তর চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে পানি জমে ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ঘোড়দৌড় মেঘাই খাল দিয়ে পানি প্রবেশ করে। ঘোড়দৌড়, পারভবানীপুর, নগর এলাকাসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩শ বিঘা জমিতে মৌসুমী সবজি আবাদ করে কৃষকরা, হঠাৎ করে ৪র্থ দফায় আকস্মিক বন্যায় আবাদি জমিতে করলা, মরিচ, বেগুন, পটল, সিম, ফুলকপি, বাধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, আমন ধানের আবাদ পানিতে নিমজ্জিত হয়।
তবে ওইসব জমিগুলো বেশি দিন পানিতে ডুবে থাকলে কৃষি আবাদ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ সকল কৃষি আবাদি জমির পানি শুকাতে এবং ফসল বাঁচাতে এলাকার ৩টি গ্রামের কৃষকরা নিজেদের সাধ্য মত অর্থ সংগ্রহ করে, ২০হাজার টাকা দিয়ে ১১দিন যাবত ১০টি শ্যালো মেশিন লাগিয়ে প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এতে করে শ্যালো মেশিন দিয়ে রাতদিন ২৪ ঘন্টায় প্রায় দৈনিক ১৭/২০ হাজার টাকা খরচ করে পানি সেচ করছে কৃষকরা। ৩০ হাজার টাকা ব্যায়ে লোহা ও ষ্টিলের সীট ক্রয় করে ঘোড়দৌর গ্রামের মেঘাই খালের মুখ বন্ধ করেও দিয়েছে, যেন বন্যার পানি আর প্রবেশ করতে পারে না।
আবাদী জমি রক্ষায় শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ার কাজে নিয়োজিত জাকারিয়া, রব্বাানী, আবিদুর, হেটলু, আব্দুর রহিমন, আইজুল, হালিম, আলতাব আলী, আইজুল, আমিনুল, মান্নান জানান, আমরা ১১দিন হয়েছে ঘোড়দৌর মেঘাই খালের সাকোটির মুখ বন্ধ করে পানি সেচ করছি। এই ১১দিনে ৪ফিট পানি কমিয়েছি। এতে অনেক জমি অনেকটা জেগে উঠেছে, রক্ষা পাচ্ছে কৃষি আবাদ। আমরা যদি সরকারি কোন সহযোগিতা পাই তাহলে কৃষি আবাদি ও কৃষক বাচবে এবং কিছুটা উপকৃত হব। আর সেচ প্রকল্প হতে অর্থ বরাদ্ধ/সহযোগিতা পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সহযোগিতা করতে সরকারিভাবে প্রণোদনা অথবা সেচ প্রকল্প হতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করব।