আমরা কোনও অপরাধ করিনি, ঘটিয়েছে ওরা তিনজন: বললেন সাইফুর ও অর্জুন

নজর২৪, সিলেট- সিলেটে ১২৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী মুরারীচাঁদ কলেজ (এমসি কলেজ) ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান ও চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর।

 

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ওই দুই আসামিকে সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. সাইফুর রহমানের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। তবে রিমান্ড শুনানিকালে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা গণধর্ষণ মামলার আসামি সাইফুর ও অর্জুন ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করে বক্তব্য দেন।

 

এ সময় তারা আদালতকে বলে, ‘ছাত্রাবাসের ঘটনার সঙ্গে আমরা জড়িত নই। আমরা কোনও অপরাধ করিনি। এই ঘটনা ঘটিয়েছে রাজন, তারেক ও আইনউদ্দিন।’

 

এর আগে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সোমবার বেলা ১১টা থেকে আদালত এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশি পাহারার প্রিজন ভ্যানে করে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সাইফুর ও অর্জুনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে আদালত এই আদেশ দেন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাডভোকেট খোকন কুমার দত্ত জানান, আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী উকালত নামা দাখিল করেননি। তবে বাদী পক্ষের হয়ে বেশ কয়েকজন আইনজীবী শুনানিকালে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তাদের বক্তব্য শুনতে চাইলে সাইফুর ও অর্জুন আদালতকে জানায়, ছাত্রাবাসের ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তারা অপরাধ করেনি। ঘটনা ঘটিয়েছে রাজন, তারেক ও আইনউদ্দিন। তাদের বক্তব্য শুনার পর পরই আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

বাদী পক্ষের হয়ে শুনানিতে অংশ নেয়া অ্যাডভোকেট ইফতেখার আলম শোয়েব বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ২ জন আসামির বিরুদ্ধে। এসময় আদালতের এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী কয়েকজন পুলিশের রিমান্ড আবেদনের সাথে একমত পোষণ করে আদালতে যুক্তি দেখান। পরে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে ছাতকের সীমান্তবর্তী খেয়াঘাট থেকে সাইফুর এবং ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্তের কাছের একটি গ্রাম থেকে অর্জুনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া ধর্ষণ মামলার অপর আসামি শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি ও রবিউল ইসলামকে রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জের শহরের কোরেশনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়। রনিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। আর নবীগঞ্জ থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

গ্রেফতারকৃত শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদর থানার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আর রবিউল ইসলাম (২৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানাধীন বড়নগদীপুর (জাগদল) গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া ওইদিন রাতে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে রাজ চৌধুরী রাজন, তাকে সহযোগিতা করায় আইনুল নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত পলাতক রয়েছে আলোচিত এই মামলার আসামি তারেক আহমদ ও মাহফুজুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *