নজর২৪, সিলেট- স্বামীকে আটকে রেখে ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট এমসি কলেজ। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা ছাত্রলীগের কর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা। কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন ছাত্রলীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী। এ সময় আন্দোলনকারীরা কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি জানান।
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায় ধর্ষকের স্থান নেই,’ ‘ঘাতক-ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর ছিল বিক্ষোভস্থল। বেলা দুইটা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে নেতৃত্ব দেন এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা দেলওয়ার হোসেন, হোসাইন আহমদ, রাসেল আহমদ, শামীম আলী, আলতাফ হোসেন মোরাদ। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এমসি কলেজ ও ছাত্রাবাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশের পর ইতিমধ্যে খালি হয়ে গেছে ছাত্রাবাস। পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে বৈঠক ডেকেছেন কলেজ অধ্যক্ষ।
দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ বন্ধ থাকার পরও ছাত্রাবাস খোলা থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রশ্ন, নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত থাকার পরও কেন ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেয়া হলো না? তাদের দায়িত্বহীনতার কারণেই আজ ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠে কলঙ্কের দাগ লেগেছে। শিক্ষার্থীরা গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
গতকাল শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। রাত ১০টার দিকে টিলাগড় এলাকার কলেজটির ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশ জানায়। এ ঘটনায় নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরীর শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। এতে ছাত্রলীগের ছয় কর্মী ও অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, রবিউল হাসান, তারেক আহমদ ও অর্জুন। আসামিদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানের রুম থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি রামদা, দুটি লোহার পাইপ। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে।
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনার পর সব ছাত্রকে শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়।