নজর২৪ ডেস্ক- পটুয়াখালীর বাউফলে সিজারের সময় নিপা রানী (২৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সিজার করা ওই ক্লিনিকের নাম সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক।
জানা গেছে, সোমবার দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা নিপা রানীর প্রসব বেদনা উঠলে তার স্বজনরা তাকে বাউফল হাসপাতলের সামনে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকে ভর্তি করেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় তার সিজার হয়। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নয়ন সরকার তাকে অ্যানেসথেসিয়া প্রদান করেন এবং তার স্ত্রী পূজা ভান্ডারী তার সিজার করেন।
নয়ন সরকারকে ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমান তালিকা থেকে করোনাকালীন নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিপা রানীর মা শিখা রানী অভিযোগ করেন, তার মেয়ের সিজার করার পর আর জ্ঞান ফেরেনি। ওই দিন দিবাগত ভোর রাত ৫টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার মেয়েকে নবজাতকসহ উন্নত চিকিৎসার নামে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সযোগে বরিশাল সদর হাসপাতালে উদ্দেশে পাঠায়।
এসময় তাদের সন্দেহ হলে পথে তারা দুমকি উপজেলার লুথার্ন হেলথ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ পরেও তারা বিষয়টি নিশ্চিত হতে মেয়েকে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকও তার মেয়েকে মৃত বলে বলে ঘোষণা করেন।
মৃত নিপা রানীর স্বামী সুজন দাস অভিযোগ করেন, ভুল চিকিৎসার কারণে তার স্ত্রী মারা গেছেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার মৃত স্ত্রীকে বরিশাল পাঠিয়েছেন। নিপা রানীর বাড়ি উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের স্বাণেস্বর গ্রামে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ডা. নয়ন সরকারের সিজার করা বা অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। তবে আমি ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তিনি এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বক্তব্য নেয়ার পরমর্শ দেন।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ডাক্তার নয়ন সরকার ও তার স্ত্রী পূজা ভান্ডারীর সিজার করার কোন এখতিয়ার আছে কিনা তা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে ডা. নয়ন সরকার বলেন, ‘যে কোন এমবিবিএস ডাক্তার সিজার করতে পারেন। তবে অভিজ্ঞতা থাকলে ভাল হয়। আমার অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার ৬ মাসের সনদ আছে এবং আমার স্ত্রী পূজা ভান্ডারীরও সিজার করার অনুমতি আছে।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানায়, আমরা বিষয়টি জানি কিন্তু তারা আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নিয়ে আসেন নাই।