দেশের ২৭ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মঙ্গলবার সকালে। চুয়াডাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া, আগামী তিন দিন সারাদেশে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
সংস্থাটি জানায়, দেশের আট বিভাগের মধ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সব জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিভাগে ঢাকা জেলা বাদে সব জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ বিভাগের কোনো জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে রেকর্ড করা হয়নি।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, “আজ সূর্যের দেখা মেলায় তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা থাকবে। তাতে কিছু কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হবে এবং কিছু কিছু জায়গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমলেও রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।”
এবারের শীত মৌসুমে ডিসেম্বরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে বেড়েছে শীতের দাপট।
কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার খবরও মিলছে প্রায় প্রতিদিনই। শীতের দাপটে ঠাণ্ডাজনিত অসুখবিসুখে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে।
পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে সকাল ১০টায়।
দেশের বড় এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামে দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এর আগে ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি দিনাজপুরে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার রেকর্ড রয়েছে। স্বাধীনতার আগে ১৯৬৮ সালে শ্রীমঙ্গলে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি রেকর্ড রয়েছে।
