বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করছে। এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপের পর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। সোমবার নাগাদ এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এরপর আরও ঘনীভূত হয়ে এটি ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এ পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
৯০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকা নিম্নচাপটি এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোলেও সোমবার থেকে চলার পথ পরিবর্তিত হবে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগের দিকে মুখ ঘুরাতে পারে।
তবে ‘হামুন’ খুব বেশি শক্তিশালী হওয়ার কোনো আশঙ্কা দেখছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এটি একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আগামী ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশের খুলনা-বরিশাল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ২৪, ২৫, ২৬ এবং এর পরবর্তী ৩ দিন খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এবং বরিশাল বিভাগের বরগুনা-এসব উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট, কোনও কোনও স্থানে ৭ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।
এ দুর্যোগ থেকে আগাম শীতকালিন সবজি খেত রক্ষায় কৃষকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. জসিম উদ্দিনের। তিনি বলেন, প্রথম কাজ হবে নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা। পরে পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। যাতে গোড়া পচা রোগ না হয়। মাচা শক্ত করে বেঁধে রাখতে হবে। যেন ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসে তা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পেঁপে ও কলাগাছে খুঁটি দিয়ে রাখতে হবে। যাতে ভেঙে না যায়।
ক্ষতির মুখে পড়তে পারে উপকূলীয় চিংড়ি ঘের ও মৎস্য সম্পদ। তাই লোকসান ঠেকাতে চাষিদের নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। মৎস্য সম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. খন্দকার আনিছুল হক বলেন, একটা পথ হলো নেট দিয়ে ঘিরে রাখা। দ্বিতীয়ত, খাবার বেশি দিতে হবে। কারণ, মাছ খেতে পেলে অন্য জায়গায় যায় না। লোনা পানি ঢুকে যেতে পারে। এটি চিংড়ির জন্য উপযুক্ত নয়। ফলে সেটা বের করে স্বাদু পানি ঢোকাতে হবে।
উল্লেখ্য, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘হামুন’। নামটি দিয়েছে ইরান।