সর্বশেষ সংবাদ

বালু আনলোড ড্রেজারে ধসে পড়ছে কোটি টাকার বাঁধ

তৌফিকুর রহমান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে। এতে করে ভূঞাপুরে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে যমুনা নদীর তীরে গাইড বাঁধের কাছে বাল্কহেড ড্রেজার বসিয়ে আনলোড করা হচ্ছে রাতের আঁধারে চর কেটে আনা বালু। গাইড বাঁধের কাছে ড্রেজার বসিয়ে বালু আনলোডের কারণে গেল বছরের মতো এবারও দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।

গত বছর বন্যায় ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা গাইড বাঁধের জিওব্যাগ যমুনা নদীতে ধ্বসে যাচ্ছে। যার ফলে হুমকিতে রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধ-পাকা সড়ক, গাইড বাঁধে বসত-বাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট-বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। ইতোমধ্যে ভাঙন শুরু হওয়ায় একটি পাকা সড়ক ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের গোবিন্দাসী ফেরীঘাট এলাকা, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, খানুরবাড়ী, নিকরাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ী, মাটিকাটা, সিরাজকান্দি, সারপলশিয়া ও অর্জুনা ইউনিয়নের- জগৎপুড়া, কুঠিবয়ড়া, রায়ের বাশালিয়া ও বলরামপুরসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামে যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু, ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের গাইড বাধের কাছে শতশত ড্রেজার বসানো হয়েছে।

গত বন্যায় টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর- গোপালপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছোট মনিরের উদ্যোগে চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলা হয়। সেসময় রক্ষা পায় নানা স্থাপনা। কিন্তু এবারও কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরে গাইড বাঁধের কাছে বালু আনলোড করার ডেজ্রার বসিয়ে বালু আনলোড করা হচ্ছে। তাই বন্যা হওয়ার আগেই এসব আনলোডের ড্রেজার বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হলেও প্রতিবাদ করা যায় না। অনেক জমির মালিক কিছু টাকার লোভে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে জমি ইজারা দিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। আবার কেউ জমি না দিলে জোরপূবর্ক জমি দখল করে অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার বলেন, যমুনা নদীতে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ওইসব এলাকায় কিছু কিছু স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তাছাড়া এমপি মহোদয় ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। বালু আনলোড করার ড্রেজারে যদি ক্ষতি হয় তাহলে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন বলেন, উপজেলার যমুনা নদীর তীরে গাইড বাঁধের কাছে বালু আনলোড করার বিষয়ে জেনেছি। ভাঙনরোধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভূঞাপুরে যমুনা নদীর অংশে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিবে সেসব এলাকায় ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএইচ

আরও পড়ুন

উপজেলা চত্বরে প্রবেশ করায় ১৭ ঘন্টা মুরগি আটকে রাখলেন ইউএনও

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদে মুরগী প্রবেশ করায় কাজের বুয়াকে দিয়ে মুরগি আটকে রাখলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়। প্রায় ১৭ ঘন্টা আটকে রাখার পর...

মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেন শিফা

মো. সানোয়ার হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু পদত্যাগ করায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মীর্জা...

সেরা পঠিত