গত শনিবার (২ এপ্রিল) কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হয়রানির শিকার হয়েছেন তেজগাঁও কলেজের এক প্রভাষক। কপালে টিপ পরায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক শিক্ষিকা হেনস্তার এই ঘটনায় শেরে বাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
শিক্ষিকার সঙ্গে এমন অপ্রীতিকর ঘটনায় উত্তপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলী কপালে টিপ লাগানো ছবি পোস্ট করে যার যার মতো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। জনপ্রিয় উপস্থাপক ও অভিনেতা সাজু খাদেমও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাল টিপ পরে ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবির ক্যাপশনে লেখেন, ‘লাল টিপ, লাল সূর্য।’
কিন্তু সেই ছবির মন্তব্যের ঘরের স্ট্যাটাসে ঢুকে দেখা যায় একাধিক ব্যক্তি তাকে বাজে মন্তব্য করেছেন। এমনকি গালিও দিয়েছেন অনেকে। আপত্তিকর মন্তব্যগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই অপ্রকাশযোগ্য। এরমধ্যে প্রকাশযোগ্য কয়েকটি মন্তব্য হচ্ছে।
একজন লিখেছেন, প্রিয় অভিনেতার মানসিক সুস্থতা কামনা করি! কেউ কেউ আবার লিখেছেন, ‘লিপস্টিক দিতেন, তাইলে না মানুষ অন্য কিছু ভাবত। এ ছাড়া অনেকেই তাকে ‘দালাল’ বলেও সম্বোধনও করেছেন। যদিও মন্তব্যগুলো অভিনেতা হাইড করে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সাজু খাদেম একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একজন নারীর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। তার পাশে দাঁড়ানো কি আমাদের কর্তব্য নয়? প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। মানুষ নানা রকম বাজে শব্দ ব্যবহার করে মন্তব্য করছেন, আমাকে গালি দিচ্ছে। যেকোনো প্রতিবাদের সময় যখন আমরা মা-বোনদের পক্ষে দাঁড়াই, তখনই এ ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। যে মানুষগুলো এসব নোংরামি করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। তাদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের মামলা হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীন রাষ্ট্রে মা-বোনেরা কী ধরণের পোশাক পরবেন, সেই স্বাধীনতা তাদের আছে। এছাড়া টিপ পরা, শাড়ি পরা বাঙালির চিরায়ত সৌন্দর্য। বাঙালির সংস্কৃতিতে নারীদের টিপ পরার রেওয়াজ আছে। বাঙালির সংস্কৃতি ধারণ করা যাবে না, এটা কে বলেছে?’
অভিনেতার ভাষ্য, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালিরা আজ যদি টিপ পরা নিয়ে এ পর্যায়ে চলে যায়, তাহলে কদিন পর আমরা নাচতে পারব না, গাইতে পারব না, অভিনয় করতে পারব না। এভাবে একদিন আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চা বন্ধ হয়ে যাবে। শিল্পী হিসেবে আমরা যদি এর প্রতিবাদ না করি, তাহলে কে করবে?’
