নজর২৪, নারায়ণগঞ্জ- হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে এক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬ মামলায় ১৮ দিনের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।
পাকিস্তানকেন্দ্রিক জঙ্গি সংগঠন ও দেশীয় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলই ছিল মামুনুল হকের মূল লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, আমির খসরু, শফিউল ইসলাম, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী প্রমুখ।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মামুনুলের বিভিন্ন কার্যক্রম আমরা খতিয়ে দেখছি। তার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা হবে।’
এসপি বলেন, রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়াই ছিল মামুনুলের টার্গেট। এ জন্য বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক দলের নেতারা তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।’
মামুনুল হক পুলিশকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘মামুনুলের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। তার ঢাকায় একাধিক বাড়ি, একাধিক মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসায় প্রতি মাসে নামে-বেনামে প্রচুর অর্থ আসে। এই অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেছেন।’
মামুনুলের কথিত স্ত্রীর ধর্ষণ মামলা প্রসঙ্গে এসপি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বিয়ের কোনো বৈধ কাগজপত্র দিতে পারেননি তিনি। মামলার বাদীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তার প্রমাণ পেয়েছি। মামলার বাদী যাতে ন্যায়বিচার পান, সে বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বসহকারে দেখছে।
২৮ মার্চ হরতাল প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, হরতালের নামে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত তাণ্ডব চালায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। এই হরতালে মামুনুলের উসকানিমূলক বক্তব্য নেতা-কর্মীদের নাশকতায় সাহস জুগিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মামুনুল হক ২৫ মার্চ নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করতে নারায়ণগঞ্জে আসেন। হরতালের সহিংসতার পেছনে মামুনুল হক সরাসরি জড়িত ছিলেন।’