আন্তর্জাতিক ডেস্ক- বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে উদীয়মান রফতানি বাজার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তুরস্ক সরকার এবং ব্যবসায়ীরা। দেশটির বাণিজ্য বিষয়ক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘তুর্কি ব্যবসায়ী ও পণ্যের জন্য এই তিন দেশ এখন সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক বাজার।’
পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত একজন তুর্কি কূটনীতিক বলেছেন যে তিনটি এশীয় দেশের সাথে তুরস্কের “মসৃণ, বন্ধুত্বপূর্ণ, সমস্যা-মুক্ত রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে”। তার দাবি এই তিন দেশই তুর্কি সংস্থাগুলিকে রফতানি চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তুরস্কের বিনিয়োগ বোর্ড ও পণ্য সামগ্রী এক্সিবিসন কমিটির চেয়ারম্যান হাকান কুর্ট পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে তুর্কি প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ শিল্পের “হট মার্কেট” হিসাবে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, এক দশক আগেও আমাদের প্রতিরক্ষা পণ্য সামগ্রী উৎপাদনে যে সমস্যা ছিল তা কাটিয়ে উঠেছি। তাতে এখন বলা যায় আমাদের পণ্যের বিক্রয়যোগ্য প্ল্যাটফর্মের অভাব আর নেই।
কুর্ট আশা করেন আগামী ১০ বছরে এই তিন দেশে ৫ বিলিয়ন ডলার সমমানের তুরস্কের তৈরি প্রতিরক্ষা পণ্য এবং মহাকাশ সম্পর্কিত পণ্য রফতানি করতে পারবে।
তবে আঙ্কারার এক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এশিয়া এই বাজারগুলি সম্পর্কে সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানান “এই দেশগুলির হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। তুরস্কের সাথে তাদের ভালো রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কারণে নগদে পণ্য কেনার অবস্থায় অনেক সময় তারা থাকে না। আবার অনেক সময় তুরস্কের তৈরি পণ্যের ক্ষেত্রে অন্য দেশের লাইসেন্স চুক্তি থাকে তাতে পণ্য বিক্রি করতে সমস্যার সৃষ্টি হয়’।
উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, ২০১৮ সালে তুরস্ক এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) পাকিস্তানের কাছে ৩০ টি ওয়ান টুয়েন্টি নাইন এটাক হেলিকপ্টার বিক্রি করার জন্য দেড় বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। তবে চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রফতানির লাইসেন্স চুক্তি সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
এ ক্ষেত্রে তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, দেশটি সম্পূর্ণ নিজেদের তৈরি নৌযান, টহল নৌকা, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, ড্রোন এবং সাজোঁয়া যান পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানকে অনায়াসেই বিক্রি করতে পারে। তাতে কোন ধরনের সমস্যা তারা দেখছেন না।
তারা আরও জানাচ্ছেন এতে করে এই মুসলিম দেশগুলো যে কোন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তুরস্কের পাশেই থাকবে। বিনিময়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সবল করে নিতে পারবে বলে অভিমত দিয়েছেন দেশটির আন্তর্জাতিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: ডিফেন্স নিউজ ডট কম, ভাষান্তর: শাশ্বত সত্য