৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক উধাও!

কালিয়াকৈরে উপজেলার সাটুরিয়া শোলহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রতন আলী ওই স্কুলের ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় অভিযোগ হলে ছাত্রীসহ শিক্ষককে খুঁজছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন- ঢাকার ধামরাই থানার জামিরাবাড়ী এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে রতন আলী। তিনি সাটুরিয়া শোলহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাস আগে রতন আলী সাটুরিয়া শোলহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ওই বিদ্যালয়ের গনিত বিষয়ের শিক্ষক। এরপর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন রতন আলী। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) তিনি তার চিকিৎসার কথা বলে ৩ দিনের ছুটি নিয়ে চলে যান। এদিকে ওই ছাত্রী রোববার সকালে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে ওই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির আরেক মেধাবী ছাত্রীর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

পরে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ও পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুজি করেও অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রীর কোনো হুদিস পায়নি। ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনায় ওইদিনই তার বাবা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে উধাও হওয়া ছাত্রীসহ ওই শিক্ষককে খুঁজছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর ওই বিদ্যালয় ছাড়াও আশপাশের বিদ্যালয়ের শিক্ষক—শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন এলাকায় নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়ম—মাফিক আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে নানা আকুতি জানাচ্ছেন পরিবারের লোকজন। এসময় তার বাবা আলী আহম্মেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওই শিক্ষকের স্ত্রী—সন্তান থাকার পরও আমার অপ্রাপ্ত বয়সের অবুঝ মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। সুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে ফেরত চাই। আর শিক্ষক নামের ওই অমানুষের কঠিন বিচার চাই।

ওই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য শামীম আল রাজী জানান, আমার মনে হচ্ছে এই ঘটনা একটি পরিকল্পিত ঘটনা। এ ঘটনা শোনার পর ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি পুরোপুরি প্রমাণিত হলে উনার সবোর্চ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছে। ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ শিক্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী কর্মকতা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। কিন্তু উনাকে পাচ্ছি না। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *