২ ঘন্টার ব্যবধানে রাজধানীতে ৪টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের ডাকা সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিনে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে চারটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও বাস চারটি পুড়ে গেছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর শ্যামলীতে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। কিছুক্ষণ পরই নতুন বাজার এলাকায় আরেকটি বাসে আগুন দেওয়ার খবর আসে। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে জানা যায়, মিরপুরে আরেকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

সবশেষ বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানার সিরামিক রোডে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিরামিক রোডে বাসটি দাঁড়িয়ে ছিল। বাসটিতে কোনো যাত্রী বা কোনো মানুষ ছিল না।

পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া বলেন, সিরামিক রোডে বাসে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারের সামনে ওয়েলকাম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

ডিএমপি ট্রাফিক মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইমরুল জানান, শ্যামলীতে ওয়েলকাম পরিবহনে যাত্রী বেশে উঠে আগুন দিয়ে বাসটি থেকে নেমে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী। উপস্থিত জনতার সহযোগিতায় দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হয়। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এরকিছুক্ষণ পরই রাজধানীর বাড্ডা নতুনবাজার এলাকার কোকাকোলা অফিসের সামনে বৈশাখী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার বলেন, নতুন বাজারে বৈশাখী পরিবহনের একটি বাসে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

পরে রাত ৯টার আগের মিরপুর-১২ নম্বরে বেসরকারি গ্রিন ইউনিভার্সিটির একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাশেদ বিন খালিদ বলেন, বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরের ভিসা ট্রেনিং সেন্টারের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে কোনো হতাহতের খবর এখনো জানা যায়নি।

এর আগে সকালে রাজধানীর মুগদায় একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। যার প্রভাব পড়েছে সড়কেও। সকাল থেকে রাজধানীর অধিকাংশ সড়কই ছিল ফাঁকা। সন্ধ্যার পর অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন লাগার পর নগরীর সড়কগুলো আরও ফাঁকা হয়ে যায়।

অবরোধের কারণে অল্প পরিমাণ যাত্রী নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে বিভিন্ন রুটে ২৯টি লঞ্চ ছেড়েছে। সাধারণত সদরঘাট থেকে দৈনিক দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৬৫-৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। যাত্রী কম থাকায় বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *