তারেক রহমানকে ‘শিষ্টাচার’ মানতে বলায় পদ গেল বিএনপি নেতার!

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য মো. শামছুদ্দিন খান রাজনীতি করেছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে। ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও। কয়েক যুগ ধরে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত এই নেতাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গেছে, তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও বক্তব্যে একটি মন্তব্য করেছিলেন। যা দলের নেতাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ফলে এই শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে শামসুদ্দিন খানকে।

রোববার (১৩ আগস্ট) বিএনপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে। দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ কথা জানান।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য মো. শামছুদ্দিন খানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও বক্তব্যের নিচে মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে এই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, মো. শামছুদ্দিনের ফেসবুক আইডি থেকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যকে ‘কটাক্ষ করে’ স্ট্যাটাস প্রকাশের ঘটনায় বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। তবে মো. শামছুদ্দিন পরবর্তী একটি স্ট্যাটাসে বিষয়টিকে ‘ফাঁসানোর’ ঘটনা হিসেবে দাবি করেছেন।

এ নিয়ে শামছুদ্দিন খান বলেন, আমাদের দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটা ভিডিও বক্তব্যে মন্তব্য করার কারণে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে আমার কিছু যায় আসে না। তারেক রহমান উনার বক্তব্যে মরহুম শেখ মুজিব, শেখ মুজিব বলছিলেন। আমি সেখানে মন্তব্য করেছি যে সম্মানিত মানুষকে নিয়ে কথা বলার সময় শিষ্টাচার মেনে কথা বলা উচিত।

তিনি বলেন, আমি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। আমার এখন ৭৪ বছর বয়স। ২০ বছর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলাম, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমার শত্রু আছে মিত্র আছে সবাইকেই আমি বলব শিষ্টাচার মেনে কথা বলার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় যখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়েছি তখন রাজনৈতিক শিষ্টাচারের কথা শিখেছি। পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের কাছ থেকে শিখবে।

শামছুদ্দিন বলেন, এই মন্তব্য করার পর দল থেকে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল, ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি ক্ষমা চাইনি। কারণ আমি যা করেছি কোনো প্রকার চাপে বা কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে করিনি। আমি সচেতনভাবে আমার নিজস্বতা দিয়ে করেছি।

এ বিষয়ে অবশ্য বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেছেন ভিন্ন কথা।

তিনি বলেন, তিনি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান-কে বক্তব্যকে কটাক্ষ করে সমালোচনা করেছেন তার ফেসবুকে। যা তিনি তার পদে থেকে প্রকাশ্যে এরকম সমালোচনা করতে পারেন না। আমি মনে করি, দলের প্রধান আমাদের আর্দশিক নেতা। আর দলের শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষা করা নেতাকর্মীদের প্রধান নৈতিক দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *