চট্টগ্রামের গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণায় যান বিনোদন জগতের একঝাঁক তারকা। সেই দলে ছিলেন চিত্রনায়ক রিয়াজও। সেসময় খোলা ট্রাকে করে চলে নৌকার প্রচারণা।
সেখানে একপর্যায়ে রিয়াজ বলেন, ‘সরকার চট্টগ্রামবাসীর জন্য দুহাত ভরে দিয়েছে, যার প্রমাণ আমরা দেখেছি আসার পথে, চট্টগ্রামের যে রাস্তা দিয়ে আমরা এসেছি, বাংলাদেশের রাস্তা মনে হয়নি, মনে হয়েছে ইউরোপের রাস্তা।’ ব্যস, বিপাকের শুরু মূলত সেখান থেকেই।
এরপর প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেই নেটিজনরা পেয়ে বসেন রিয়াজকে। তাকে নিয়ে মিম বানানো হয়। এ বছরও সেটির ব্যতিক্রম হলো না। হাতে কাতলা মাছ ধরা একটি ছবি দিয়ে তাকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ডুবে যাওয়া শহরে। জলাবদ্ধতা পেয়ে বসেছে চট্টগ্রামকে আর নেটাগরিকরা পেয়ে বসেছেন রিয়াজকে!
সমাজমাধ্যমে ভেসে বেড়ানো ট্রলগুলো চোখ এড়ায়নি রিয়াজের। এটা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে চট্টগ্রামবাসীদের দুর্ভোগের নিরসন চাই। আমার মনে হয় চট্টগ্রাম নগরীর দায়িত্বে যারা আছেন তাদের বিষয়টি দেখা উচিত। প্রতিবছর শহরের বাসিন্দাদের এমন দুর্ভোগ আমারও কাম্য না। সমস্যাটির সমাধান হলে আমারও ভালো লাগবে।’
রিয়াজ মনে করেন তাকে নিয়ে ট্রল না করে নিজেদের নাগরিক দায়িত্বটা পালন করলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হতে পারে। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ শুরু হলেই আমাকে নিয়ে ট্রল শুরু হয়। কিন্তু যারা ট্রল করছেন তারাই দেখবেন, ট্রল শেষে প্লাস্টিকের প্যাকেটটি রাস্তায় ছুড়ে ফেলছেন, পানি কিংবা কোমল পানীয়র বোতল যেখানে সেখানে ফেলছেন। আমাকে কটাক্ষ না করে এই দায়িত্বগুলো যদি তারা সঠিকভাবে পালন করতেন তাহলেও তো এই সমস্যার অনেকটা সমাধান হত।’
এরপর ট্রলকারীদের উদ্দেশে রিয়াজ বলেন, ‘আমাকে নিয়ে ট্রল যারা করছেন তাদের আইডিগুলো দেখলে, পোস্টগুলো পড়লেই স্পষ্ট হয়ে যায়— তারা কারা! তারা একটি চক্র। তারা গুজব ছড়ান। সরকারবিরোধী কথা বলেন। উন্নয়ন বিরোধী কথা বলেন। এতে আমি কিছু মনে করি না, আমার কিছু যায় আসে না।’
ক্রমাগত এই ব্যঙ্গ বিদ্রুপ আর চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ দেখে সমালোচিত মন্তব্যটি তুলে নিতে চান— জানতে চাইলে দৃঢ়কণ্ঠে রিয়াজ বলেন, ‘না, আমি কখনও আমার মন্তব্য উইথড্র করতে চাই না। বরং আবার মন্তব্যটি করতে চাই। কেননা, আমি একজন ইতিবাচক মানুষ। আমার সামনে একটি গ্লাসে অর্ধেক পানি রাখলে বলব না— গ্লাসটি অর্ধেক খালি। আমি বলব— গ্লাসটি অর্ধেক ভরা। যাতে করে সবার ভেতর ইতিবাচক মনোভাব জাগে।’
সবশেষে রিয়াজ বলেন, ‘এই জলাবদ্ধতা শুধু আমাদের এখানেই হয় না। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশেও এমনটা দেখা যায়। সামাজিক মাধ্যমে খুঁজলেই চোখে পড়বে। আমার মনে সেখানে বিষয়টি নিরসনে কাজ করা হয়, ট্রল করা হয় না।’