গত বছরের সেপ্টেম্বরে নেপালের মাটিতে স্বাগতিকদের হারিয়ে সাফ শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। দক্ষিণ এশিয়া শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সব ব্যক্তিগত ও দলীয় পুরস্কারও গিয়েছিল বাঘিনীদের ঝুলিতেই। নেপাল থেকে ফিরে ছাদখোলা বাসে শিরোপা উদযাপন এবং দেশবাসীর কাছ থেকে রাজসিক অভ্যর্থনা পেয়েছিল তারা।
বছর না ঘুরতেই সেই বাংলাদেশ দলে যেন ভাঙনের সুর। হঠাৎ বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল থেকে অবসর নিয়েছেন সাফজয়ী সদস্য সিরাত জাহান স্বপ্না। ব্যক্তিগত কারণ বলা হলেও দীর্ঘদিন ধরে খেলার বাইরে থাকায় অবসাদ ও বিরক্তি থেকে ফুটবল ছেড়েছেন বলে জানা গেছে। তার আগে সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের আরও দুই খেলোয়াড় অবসর নিয়েছিলেন।
এবার জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন গোলাম রব্বানী ছোটন। ১ জুন থেকে জাতীয় দলের সঙ্গে না থাকা নিশ্চিত করে শুক্রবার (২৬ মে) সাফজয়ী এ কোচ বলেন, “গত সাত-আট বছর ধরে নারীদের ফুটবলের জন্য আমি টানা কাজ করে আসছি। আমার বিশ্রাম দরকার। আমি এখানে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত আছি। এরপর আমি আর মহিলা ফুটবল দলের সঙ্গে থাকব না।”
কেন এই সিদ্ধান্ত, জানতে চাইলে বলেন, ‘অনেক তো করলাম। অনেক চাপ। পারিবারিক জীবন আছে। বন্ধুবান্ধব আছে। কাউকেই সময় দেওয়া হয়নি। ওদিকে মহিলা দলের ওপর সবার প্রত্যাশা বাড়ছে। আমি মনে করি, অনেক হয়েছে। এবার সরে যাই। এ কারণে আমি আর মেয়েদের কোচ হিসেবে থাকছি না।’
ছোটন ইতোমধ্যে মৌখিকভাবে তার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারকে জানিয়েছেন। শিগগিরই তিনি দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে লিখিত চিঠি দেবেন।
ছোটনের কাছ প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, জাতীয় দলের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে না পারা এবং তার শিষ্যদের ফুটবল ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো হতাশাজনক নানাবিধ কারণে তিনি সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছেন কিনা। ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ কোনো জবাব দেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন যে এই ভূমিকায় ফিরে আসার আর কোনো সম্ভাবনা তার নেই।
উল্লেখ্য, সাফের শিরোপা জেতার পর থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দল। বাফুফে কম্বোডিয়া ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের ঘোষণা দিলেও তাদের কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল পাওয়া যায়নি।