কোনো মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার আদর্শ আছে। তার আদর্শ নিয়েই এগিয়ে যাব আমরা। কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সবাই পাবে মৌলিক অধিকার।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই শিশুদের কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। শিশুরা যাতে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই সরকারের লক্ষ্য। জাতির পিতার আদর্শেই শিশুদের বিনামূল্যে বই ও উপবৃত্তি তুলে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টুংগীপাড়া জাতির পিতা শেখ মুজিবের জন্মস্থান। এই মাটিতেই তিনি জন্ম নিয়েছেন এই মাটিতে তিনি বড় হয়েছেন আর এই মাটিতেই তিনি শায়িত আছেন।’
বঙ্গবন্ধু নিজের জীবনটাকে বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য উৎসর্গ করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর ভেতরে যে মানবিকতা মানুষের প্রতি দরদ শিশুকালেই জানা গেছে। যখন তিনি স্কুলে পড়তেন, দরিদ্র কোনো ছেলে বই নেই, নিজের বই দিয়ে দিতেন, নিজের গায়ের কাপড় খুলে দরিদ্র মানুষকে বিলিয়ে দিতেন। এমনকি দুর্ভিক্ষের সময় নিজের গোলার ধান পর্যন্ত তিনি মানুষকে বিলিয়ে দিয়েছেন। তার ভেতরে সেই মানবিকতা ছোটবেলা থেকেই আমার দাদা-দাদি লক্ষ্য করেছেন।’
‘এবং বড় হয়ে তিনি এদেশের মানুষ, যারা শোষিত বঞ্চিত ছিল, একবেলা খাবার পেত না, যাদের কোনো পুষ্টি ছিল না, রোগে চিকিৎসা পেত না, ঘরবাড়ি ছিল না, সেইসব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার লক্ষ্যেই তিনি সংগ্রাম করেছেন’-যোগ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা মাতৃভাষায় কথা বলতে পারি, বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি। সেই ৪৮ সাল থেকেই এর জন্য আন্দোলন তিনিই শুরু করেছিলেন। তারই নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়। কাজেই জাতির পিতার এই জন্মদিনকে আমরা শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছি।’
‘জাতির পিতা যখন আমাদের স্বাধীনতা এনে দেন, মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তিনি একটি সংবিধান করে দিয়েছিলেন’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সংবিধানে কিন্তু শিশু অধিকারের কথা বলা আছে।’
‘বঙ্গবন্ধুই প্রথম এদেশে প্রায় ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন। শিশুদের সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন করেন। জাতীয় শিশু আইন ১৯৭৪ তিনিই প্রণয়ন করে দিয়ে যান। তিনি ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করে সেই শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করে দেন মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দেন’-উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।