আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের বিজেপি সমর্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার কলমের এক খোঁচায় ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ কেড়ে নেয়। দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার পাশাপাশি অঞ্চলটিকে দুই ভাগ করে কেন্দ্রের শাসন জারি করা হয়।
এই আইনের বিরুদ্ধে প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা জম্মু-কাশ্মিরের জনগণ সীমিত আকারে প্রতিবাদ আন্দোলন করে। তবে ভারতের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ওআইসিভুক্ত দেশগুলো যেমন পাকিস্তান, তুরস্ক ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ করা প্রতিক্রিয়া দেখায়। নিন্দা জানায় পশ্চিমা অনেক দেশ ও সংস্থাও।
এসবে কান না দেয়া মোদি সরকার এবার জম্মু-কাশ্মিরে জেলা স্তরের নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বরের এ ভোটে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ২৮০ সদস্য নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন কাশ্মিরীরা। কাশ্মিরের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়ার পর উপত্যকায় এটিই প্রথম নির্বাচন হওয়ায় প্রবল কৌতূহল তৈরি হয়েছে ভারতজুড়ে। ভোটে প্রত্যেকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধী জোট।
বিরোধী জোটের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স ও মেহবুবা মুফতির পিডিপি রয়েছে। এ জোটে কাশ্মিরের আরো কয়েকটি দল থাকায় আসন সমঝোতা করেছে কংগ্রেস। এক কথায় বলা যায়, এ নির্বাচনে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পক্ষে বিজেপি লড়ছে আর এর বিরুদ্ধে কাশ্মিরের সবগুলো দল ও কংগ্রেস লড়ছে। এই নির্বাচনের প্রতি ভারতীয়দের কৌতূহলী হওয়ার এটা্ও একটা কারণ।
অনেকে বলছেন, কাশ্মিরীরা ভারতীয় এ পদক্ষেপ মানতে পারেননি, পারবেও না কখনো। এজন্য বিজেপি প্রার্থীদের জয় পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। জোর জবরদস্তি করে কিছু আসনে জেতার চেষ্টা করবে দলটির প্রার্থীরা।
অন্যদিকে দীর্ঘ বন্দী দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর একজোট হয়েছেন ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি। তাদের মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি প্রথমবার হাত মিলিয়েছেন, আছে সিপিএমও। ফলে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভোট হলে বিরোধী জোটের প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। সব মিলিয়ে এই জেলা পর্যায়ের নির্বাচনে রাজ্যসভা নির্বাচনের আমেজ পাবে কাশ্মিরীরা। এমনটাই বলছেন সম্প্রতি কাশ্মির ঘুরে আসা আলোচিত একটি পশ্চিমা পত্রিকার উর্দু ভাষার সাংবাদিক সালাউদ্দিন।