নজর২৪ ডেস্ক- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী ধর্ষণ মামলার দুই আসামি নাজমুল হুদা ও সাইফুল ইসলামসহ বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চার নেতাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল রোববার দুপুরের দিকে পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদাকে মগবাজার এলাকা থেকে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন তার মা মাসুমা বেগম। এরপর একে একে আরও তিন নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছে পরিষদের নেতাকর্মীরা।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে মামলা আছে। এর মধ্যে নাজমুলকে দুপুরে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। এ ছাড়া ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতা সোহরাব হোসেন ও আসিফ মাহমুদকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতাকে পুলিশ তুলে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ও ভুক্তভোগীর পরিবার পুলিশ ও ডিবিতে খোঁজ করে পাচ্ছি না। পুলিশ যেহেতু তাদেরকে গ্রেপ্তারের কথা বলছে না, তাই আমরা ধরে নিয়েছি রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা গুম হয়েছেন তারা। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
সারা দেশে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনকে দমানোর জন্য এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে সরকার এ কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন রাশেদ খান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক জানান, ধর্ষণ মামলায় তার টিম কাউকে আটক করেনি।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের এক ছাত্রী তার বিভাগেরই সদ্য সাবেক ছাত্র হাসানের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন সম্প্রতি। গত ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্র হননের অভিযোগে দুটি মামলা করেন।
হাসানের পাশাপাশি পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই ছাত্রী। আর এতে সহযোগিতার অভিযোগে আসামি করা হয় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ পরিষদের আরও তিন নেতাকে।
এদিকে আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গত চার দিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন করছেন অভিযোগকারী ওই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে টানা অনশনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর রাত ২টার দিকে ফিরে আবারও রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন তিনি। এই সময় তার পাশে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নারীকর্মীসহ তার সহপাঠীরা অবস্থান করেন। আসামিদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানেই এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।