নজর২৪, ঢাকা- সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবীর দুই নাতিকে বাড়িতে ফিরিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধানমণ্ডি থানার ওসিকে এই নির্দেশ বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, রাজধানী ধানমণ্ডির একটি চারতলা বাড়ির মালিক সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবী। সম্প্রতি সাবেক অ্যাটর্নির ছোট ছেলে সিরাতুন নবী মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকে তার দুই ছেলে কাজী আদিয়ান নবী ও কাজী নাহিয়ান নবীকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে, শিশু দুটির বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটনা ঘটে। বাবার মৃত্যু হলে শিশু দুটি কিছুদিনের জন্য তার মায়ের আশ্রয়ে থাকতে যায়। মায়ের কাছ থেকে নিজ বাসায় ফেরার চেষ্টা করে ওই দুই শিশু। কিন্তু তাদেরকে আর বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এরপর কয়েকবারের চেষ্টা করেও শিশু দুটি ওই বাসায় প্রবেশ করতে পারেনি। এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানাকে জানানো হয়। তবে পুলিশের অনুরোধেও শিশুদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি তাদের চাচা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেহান নবী।
ঘটনাটি নিয়ে রবিবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির একাত্তর জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এসময় একাত্তর জার্নালে শিশু দুটির সঙ্গে তাদের ফুফু, সাংবাদিক রেজওয়ানুল হক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। একাত্তর জার্নালের অনুষ্ঠানটি প্রচারকালে বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের। এরপর প্রচারিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তিনি মাঝরাতে হাইকোর্টের বেঞ্চ বসিয়ে আদেশ দেন।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, রাতে একাত্তর টিভির একাত্তর জার্নালে আমিও যুক্ত ছিলাম। সেখানে দু’টি শিশু নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। ওই দু’টি বাচ্চা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল প্রয়াত ব্যারিস্টার কে এস নবীর নাতি। যাদের বাবা কিছুদিন আগে ইন্তেকাল করেছেন। এখন তাদের চাচা তাদেরকে বাসায় ঢুকতে দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া টকশোটি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বিচারপতি আবু তাহের মো.সাইফুর রহমানের নজরে আসায় তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে তাৎক্ষণিক আদেশ দেন। আদেশে ওই দুই শিশুকে তাদের বাসায় নিরাপদে রেখে আসতে ধানমণ্ডি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এছাড়া আগামীকাল (রোববার) সকাল ১০ টায় আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলা হয়েছে ধানমণ্ডি থানার ওসিকে।
এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আমরা খুব সুন্দরভাবে দুই শিশুকে রাত দেড়টার দিকে তাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে এসেছি।
জানা গেছে, এর আগে রাতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত বসে কয়েকটি আদেশ দেওয়ার ঘটনা আছে। কিন্তু মধ্যরাতে হাইকোর্ট বসিয়ে আদেশ দেওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে বিরল।
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টর কে এস নবী (কাজী শহীদুন নবী) ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তিনি ইন্তেকাল করেন।