আন্তর্জাতিক ডেস্ক- চীন ও পাকিস্তান সীমান্তে নিয়োজিত সেনা সদস্যদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রায় ৭২ হাজার সিগ সয়ার অ্যাসল্ট রাইফেলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম কিনতে মোট দুই হাজার দুইশ’ নব্বই কোটি রুপি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রতিরক্ষা ক্রয় কাউন্সিলের (ডিএসি) বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কেনাকাটার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সর্বোচ্চ সংস্থা এই কাউন্সিল।
ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ৭২ হাজার অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল কিনবে ভারত। মূলত চীন এবং পাকিস্তান সীমান্তে নিয়োজিত সেনাদেরকে এই রাইফেল দেওয়া হবে। রাইফেল ছাড়াও নৌ এবং বিমান সেনাদের জন্য স্মার্ট অ্যান্টি এয়ারফিল্ড ওয়েপন সিস্টেম কেনা হবে বলে জানা গেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, অ্যাসল্ট রাইফেল ছাড়াও অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্র কেনা হচ্ছে ৯৭০ কোটি টাকা দিয়ে। এই অস্ত্র দেশের নৌ ও বিমান বাহিনীকে শক্তশালী করবে। এছাড়া অত্যাধুনিক রেডিও সেট কেনা হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে নিরাপদ ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে। এজন্য খরচ হবে আরও ৫৪০ কোটি টাকা।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ইনসাস রাইফেলকে ধীরে ধীরে বাতিল করে অত্যাধুনিক সিগ সয়ার রাইফেল ব্যবহার করার দিকে ঝুঁকেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য আট লাখ অ্যাসল্ট রাইফেলের প্রয়োজন। ধাপে ধাপে তা কেনা হবে।
আমেরিকার দ্য স্মল আর্মস ম্যানুফ্যাকচারার সিগ সর এই রাইফেল তৈরি করবে। ৭ দশমিক ৬২ এমএম অ্যাসল্ট রাইফেলের নাম সিগ ৭১৬, যা ফ্রন্টলাইন সেনা জওয়ানদের জন্যই মূলত ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক একটি রাইফেলের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২ হাজার টাকা।
১৬ ইঞ্চির ব্যারেলের এম-এলওএম হ্যান্ডগার্ড রাইফেলে রয়েছে ৬ পজিশন টেলিস্কোপিক স্টক, যার সাহায্যে শত্রুপক্ষকে আঘাত করা যাবে যে কোনও দিক থেকেই। এটি একটি সেমি অটোমেটিক মাল্টি-ক্যালিবার রাইফেল।
ঘাতক নামে একই ধরনের রাইফেল তৈরি করেছে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরিও। কিন্তু ওই কারখানার কর্মকর্তাদের আক্ষেপ সেই রাইফেলের কদর করছে না ভারত।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকেই ভারতীয় স্থল বাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। লাইট মেশিন গান, রাইফেল, কারবাইনও বদলানো হচ্ছে। তার সূত্র ধরেই, এবার রাইফেলের পাশাপাশি আধুনিক মেশিন গান এবং কারবাইন কেনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে উন্নত রেডিও সেটও কেনা হচ্ছে। সিমলেস ওই রেডিও সেটের ট্রান্সমিশন সীমান্তে বিপক্ষের সেনারা ট্র্যাক করতে পারবে না বলে সেনা সূত্র জানিয়েছে।