শক্তি-সামর্থ্যে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে পাকিস্তান। ম্যাচ শুরুর আগে ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস বলেছিলেন, ’পাকিস্তান অবশ্যই খুব ভালো দল। আমরা মাঠে নামার অপেক্ষায় আছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলা উপহার দেওয়ার প্রত্যাশা করছি।’ সামর্থ্য অনুযায়ী নেদারল্যান্ডস যথেষ্ট ভালো খেলাই উপহার দিয়েছে। কিন্তু, ম্যাচ জয়ের জন্য সেটি পর্যাপ্ত ছিল না। পাকিস্তান পেয়েছে প্রত্যাশিত জয়। আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) নেদারল্যান্ডসকে ৮১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে পাকিস্তান।
যদিও ম্যাচের শেষদিকে পাকিস্তানের জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়েছেন টেল-এন্ডার ব্যাটার লোগান ভ্যান বিক। তবে ওভার শেষে পল ভ্যান মিকেরান স্ট্রাইকে যেতেই তাকে বোল্ড করে নেদারল্যান্ডসের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন হারিস রউফ। পাকিস্তানের হয়ে তিনি সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে এদিন ব্যক্তিগত অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন ওপেনার ভিক্রমজিত সিং ও বাস ডি লিড। বল হাতে চারটি উইকেট নিয়ে এর আগে ডি লিড পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ব্যাট হাতেও দারুণ প্রভাবশালী ছিলেন তিনি। বিপরীতে ডাচ ব্যাটারদের বিপক্ষে মিতব্যয়ী বোলিংয়ে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করে গেছেন পেসার হাসান আলী। অথচ তার বিশ্বকাপই খেলার কথা ছিল না, নাসিম শাহের ইঞ্জুরি তার বিশ্বকাপে খেলার পথ খুলে দেয়। এছাড়া হারিস রউফ, শাহিন আফ্রিদি ও মোহাম্মদ নেওয়াজরাও প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণে রেখেই বল করেছেন।
পাকিস্তানের দেওয়া বড় লক্ষ্যের জবাবে শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি নেদারল্যান্ডসের। তবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে তারা ম্যাচের মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেনি। স্বাভাবিক গতিতে রান তোলার মাঝে ষষ্ঠ ওভারে ফাইন লেগে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন ম্যাক্স ও’ডাউড। হাসান আলীর করা বলটি কিছুটা বাউন্স থাকায় ব্যাটে ঠিকঠাক মতো হয়নি, ফলে মাত্র ৫ রান করেই বিদায় নেন ডাচ ওপেনার। এরপর দলীয় ৫০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলটি। এবার স্পিন অলরাউন্ডার ইফতিখার আহমেদের শিকার ডাচদের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার কোলিন অ্যাকারম্যান। বোল্ড হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে ১৭ রান আসে।
এরপর বাস ডি লিড ও ভিক্রমজিত মিলে জুটি বাধেন ৭০ রানের। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের রানের ব্যবধানও প্রায় নাগালে চলে আসছিল। তবে তাদের সেই ছন্দে বিঘ্ন ঘটান লেগ-স্পিনার শাদাব খান। তার গুগলিতে ভিক্রমজিতের ব্যাট থেকে বল ডিপ মিড উইকেটে উড়ে যায়। দৌড়ে গিয়ে সেটি তালুবন্দি করেন ফখর জামান। চারটি চার ও এক ছক্কায় ৫২ রান (৬৭ বল) করেন এই ডাচ ওপেনার। তার পরপরই তিন বলের ব্যবধানে দুবার আঘাত করেন রউফ। ৫ রানে তেজা নিদামানুরু এবং শূন্য রানেই ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ড আউট হয়ে দলকে খাদের মুখে ফেলে দেন।
পরবর্তীতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ক্রিজে স্যাটেল ব্যাটার ডি লিড থাকলেও তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। শেষ উইকেটে ভ্যান বিক তিনটি চার ও এক ছয়ে ২৮ করে ম্যাচের স্থায়িত্ব বাড়ান। তবে দলের হার ঠেকানোর জন্য সেটি যথেষ্ট ছিল না। ডি লিড এর আগে ৬টি চার ও দুই ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৭ রানের (৬৮ বল) ইনিংস খেলেছেন।
পাকিস্তানের হয়ে রউফ ৩টি, হাসান আলী ২টি এবং শাহিন আফ্রিদি, নেওয়াজ, শাদাব ও ইফতিখার উইকেট নেন একটি করে।