ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে ভারত থেকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চারটি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিত তাদের এক কোটি করে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আরও ডিম আমদানির অনুমতির কথা ভাবছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি আমদানি করা ডিম ভোক্তাদের কাছে দশ টাকা দামের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
জানা গেছে, সম্প্রতি প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ দামে বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে কি না সেটি মনিটরিং করা হয়। কিছু কিছু জায়গায় নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি হলেও অনেক জায়গায় নিজেদের মতো বাড়তি দামে বিক্রি করছেন অনেকে। পরবর্তীতে বাজার পর্যালোচনা করে সীমিত আকারে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশে ১ দিনে চার কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে একদিনের চাহিদার সমান পরিমাণ ডিমের আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং, অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেডকে ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এক কোটি করে ডিম আমদানি করবে। এরমধ্যে মীম এন্টারপ্রাইজ নির্ধারিতভাবে ভারত থেকেই ডিম আমদানির কথা জানিয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সুবিধা মতো জায়গা থেকে ডিম আনবে। তবে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ডিম আনবে, সেক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে ভারতীয় ডিমেই।
এক কোটি ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া টাইগার ট্রেডিংয়ের মালিক সাইফুর রহমান বলেন, ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে ডিম আমদানি করাকে তারা লাভজনক মনে করছেন না।
ভারত থেকে আমদানি করে দেশে বিক্রি করতে ডিমের দাম কত পড়তে পারে জানতে চাইলে সাইফুর রহমান বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, হরিয়ানা, হায়দরাবাদে ও অন্ধ্রপ্রদেশে ডিমের হালিপ্রতি দর ১৮ রুপি থেকে ২২ রুপি (২৪ থেকে ২৯ টাকা)। এর সঙ্গে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি ৩৬ থেকে ৪০ টাকা হালির মধ্যে ক্রেতাদের হাতে ডিম তুলে দিতে পারব। সাইফুর রহমান আরও বলেন, ঋণপত্র খোলা দ্রুত সম্ভব হলে এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করা গেলে এক সপ্তাহে ভারত থেকে ডিম আমদানি সম্ভব।
বাংলাদেশে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজন হলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি দিতে পারে। কাস্টমস ট্যারিফের তালিকা (২০২৩-২৪) অনুযায়ী, ডিমের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক রয়েছে। মোট শুল্ক–করভার ৩৩ শতাংশ। ফলে ১০০ টাকার ডিম আমদানি করতে ৩৩ টাকা শুল্ক–কর দিতে হবে।