ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ইটিটি কক্ষে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন প্রবেশ করতে চাইলে এডিসি হারুন বাধা দেন বলে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক আয়া জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আয়া বলেন, ‘এপিএস মামুন তখন চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘আমার বউয়ের কাছে আমি যাব, তুই আটকানোর কে?’
গত শনিবার রাতে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার দিন হৃদ্রোগের চিকিৎসার জন্য ইটিটি করতে গিয়েছিলেন এপিএস মামুনের স্ত্রী এডিসি সানজিদা আফরিন। তাঁর সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন এডিসি হারুন। চারতলায় ৪০২৩ নম্বর ইটিটি কক্ষে ছিলেন সানজিদা। বাইরে বসে অপেক্ষা করছিলেন এডিসি হারুন। তখনই ঘটনাস্থলে আসেন এপিএস মামুন।
সেদিন ইটিটিতে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী এক আয়া বলেন, ‘এপিএস মামুন এসেই এডিসি হারুনকে বলেন, “আপনি এখানে কী করছেন।” স্ত্রী কোথায় আছেন জানার পর মামুন সরাসরি ইটিটি রুমে চলে যান। পেছন থেকে বাধা দেন এডিসি হারুন। ততক্ষণে আশপাশে মানুষ জড়ো হয়ে যায়। এপিএস মামুন তখন চিৎকার দিয়ে বলেন, “আমার বউয়ের কাছে আমি যাব তুই আটকানোর কে?” জোর করেই মামুন ইটিটি রুমে গিয়ে সঙ্গে থাকা দুই ছেলেকে ভিডিও করতে বলেন, তখন তাঁর স্ত্রী সানজিদা এপিএস মামুনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তাঁদের বাধা দেন চতুর্থ তলায় দায়িত্বরত গার্ড ওয়ারেছ আলী।’
ওয়ারেছ আলী বলেন, ‘ইটিটি রুমে বিশৃঙ্খলা থামাতে সবাইকে রুম থেকে বের হওয়ার অনুরোধ করি। একটু পরই পুলিশ এসে তাঁদের নিয়ে যায়।’
এদিকে ঘটনার পরদিন রোববার ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘটনা সম্পর্কে অবগত করে চিঠি দেন সিকিউরিটি সুপারভাইজার ওয়ারেছ আলী। তিনি চিঠিতে লেখেন, শনিবার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে আসা একদল দর্শনার্থী ইটিটি (এক ধরনের শারীরিক পরীক্ষা) কক্ষের সামনে মারামারি করেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিট পরিদর্শন করে এসে তিনি এই মারামারি দেখতে পান। দু’পক্ষকে অনুরোধ করে তিনি মারামারি থামাতে সমর্থ হন। মারামারিতে লিপ্ত ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে প্রথমে তারা জানাতে রাজি ছিলেন না। পরে অনুরোধ করলে তারা পরিচয় দেন।
এতে জানা যায়, একজন রাষ্ট্রপতির এপিএস ও অন্যজন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রমনা ও শাহবাগ থানার পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়।