রাজ-পরীমণি ইস্যুতে অবশেষে মুখ খুললেন তমা মির্জা

মিলনের আভাস দিয়ে পরদিনই রক্তারক্তি অবস্থা! সিনেমার গল্পই যেন বাস্তবে ধরা দিচ্ছে আলোচিত-সমালোচিত দম্পতি শরিফুল রাজ ও পরীমণির জীবনে। এ নিয়ে নেটপাড়ায় চলছে বিস্তর সমালোচনা। আসলেই কি তারা মিলেছিল, নাকি পুরোটাই অভিনয়—এমন প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

সূত্রের বরাতে জানা যায়, তার মাথা ফেটে গেছে। কিন্তু কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল— সেই তথ্য জানা যায়নি। তবে গুঞ্জন চাউর হয়েছে এই মাথা ফাটার নেপথ্যে রয়েছে রাজ-পরীর মারামারি। এক নির্মাতার অফিসে ঝগড়া হয় রাজ-পরীর। একসময় তা ভয়ানক মারামারিতে রূপ নেয়। এতে রক্তাক্ত হন রাজ। পরীমণি হন অসুস্থ। অন্যদিকে তাদের এই ঝগড়া থামাতে গিয়ে আহত হন তমা মির্জা। বিষয়টি নিয়ে রাজ-পরী মুখ না খুললেও খুলেছেন তমা।

তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে কেউ কারও হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কি চেকইন দেয়? আমি কিন্তু হাসপাতালে ঢুকেই সেটা দিয়েছি। দ্বিতীয়ত, আমি সেই মেয়ে, যে স্বামীর হাতের মার খেয়ে ঘর ছেড়েছি। সেটার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করার জন্য যা যা করা দরকার করেছি। তো সেই মেয়েটিকে অন্য কারও জামাই এসে মেরে চলে যাবে, আর আমি চুপচাপ হাসপাতালে শুয়ে কাঁদবো- সেটা তো কল্পনাই করতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, ‘ফলে আমার বক্তব্য স্পষ্ট, রাজ-পরীর মারামারির যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেটার আশেপাশেও আমি ছিলাম না। ইভেন ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজ-পরী বাসা থেকে বেরিয়ে আমাকে ফোনও করেছে দেখা করার জন্য। আমি বলেছি, আমার জ্বর। আজ দেখা হবে না। এরপর পরী বললো, ‘ওকে বাসায় রেস্ট নাও। কাল দেখতে আসবো। এরমধ্যে কী হলো, আমি আর জানি না।’

এদিকে শনিবার ভোরে পরীমণি সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি দিয়ে জানান, তিনি হাসপাতালে। নিজের ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। সেখানে দেখা গেছে, ক্যানোলা লাগানো দুটি হাত। ক্যাপশনে অভিনেত্রী লেখা, ‘আমরা পরীতমা।’ চেক ইন দিয়েছেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের নাম। এ থেকে স্পষ্ট হয় পরীমণি ও অভিনেত্রী তমা মির্জা দুজনেই একই হাসপাতালে।

বিষয়টি খোলাসা করে তমা বলেন, ‘১৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর জ্বরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি ১০টার দিকে হাসপাতালে যাই। ভর্তি হই। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সবাই জানেন, আমার অ্যাজমাটিক প্রবলেম রয়েছে। কিডনিতেও সমস্যা রয়েছে। ফলে শরীরে যাই হোক, তখন এগুলো জেগে ওঠে। তো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমি ওষুধ খেয়ে তো অচেতন অবস্থা। হঠাৎ আম্মু ডেকে ওঠালো, বললো পরী এসেছে। উঠে দেখি পরী হুইল চেয়ারে। সঙ্গে রাজ্য-চয়নিকা বৌদি, নাচের দুটো ছেলেসহ বেশ কজন আমার কেবিনে। পরী বললো, ওর জ্বর এসেছে। তাই চলে এসেছে। এরপর কাশতে কাশতে গল্প করলাম, সেটাই শেষ।’

এর আগে গান বাংলা চ্যানেলের দুই কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপস ও ফারজানা মুন্নী দম্পতি তাদের কার্যালয়ে পরীমণি ও রাজের সন্তান রাজ্যর জন্মদিন উদযাপন করতে কেক কাটেন। তার আগেই বসুন্ধরার বাসা থেকে পরীমণি সন্তানসহ সেখানে যান। অন্যদিকে রাজও যান সেখানে। দুজনের সেখানেই দেখা হয়। পরে এই জুটি একসঙ্গে ছবি তোলেন। যা ফেসবুকে প্রকাশ করেন তাপস।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সেসব স্থিরচিত্র দেখে সবাই ভেবেছিলেন, নিজেদের মধ্যকার মান-অভিমান ভুলে প্রায় তিন মাস পর এক ছাদের নিচে ফিরছেন পরীমণি ও রাজ। কিন্তু পরে শোনা যায়, ফের রাজ বেরিয়ে এসেছেন পরীমণির বাসা থেকে।

ঘটনা যা-ই ঘটুক না কেন, যতক্ষণ না শরিফুল রাজ ও পরীমণি মুখ না খুলছেন ততক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না, কী ঘটেছিল সেদিন। তবে রাজ-পরী যে মিলেনি তার প্রমাণ আবারও প্রকাশ্য এলো।

প্রসঙ্গত, গত ২০ মে পরীমণিকে রেখে নিজের সব জিনিসপত্র নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে দিবাগত রাতে রাজের ফেসবুক আইডি থেকে রাজ ও তিন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়। তারপর থেকে দুজনের সম্পর্কে আরও অবনতি ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *