ভেঙে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানে পার্লামেন্ট। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি বুধবার মধ্যরাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন।
১২ আগস্ট পর্যন্ত পাকিস্তানের বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ থাকলেও তার তিন দিন আগেই পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হলো। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ফেডারেল কেবিনেটের কার্যকারিতাও শেষ হয়েছে। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে শেহবাজ সরকারের শাসনের অবসান এবং দেশটিতে নতুন নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের দপ্তর আইওয়ান-ই-সদর এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৫৮ ধারা অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বুধবার (৯ আগস্ট) প্রেসিডেন্ট আলভির কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে চিঠি পাঠান। শেহবাজ শরীর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১২ আগস্ট। এর তিনদিন আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে বুধবার মধ্যরাতে প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন করতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ মেয়াদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন হবে। সে হিসেবে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে নতুন পার্লামেন্টের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তুতি চলবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলীয় নেতা তিন দিন ধরে কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী নিয়ে আলোচনা করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি। তবে তারা সমাধান করতে না পারলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেবেন। তারাই তিন দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম নির্বাচন করবেন। তারাও ব্যর্থ হলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দুই দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
গত বছরের এপ্রিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরীফ। এরপর নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিল তার সরকার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানো ইমরানকে দমনেও ব্যস্ত ছিল শেহবাজ শরীফের সরকার।
অনেকের ধারণা, ইমরান খান যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন— পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার আগে সেই ব্যবস্থা করেছে শেহবাজের জোট সরকার। ইমরানকে প্রথমে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড এরপর তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা করেছে তারা।