তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’

দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে একটি গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এ রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়াবিদদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এইসময় জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের উৎপত্তি হয়েছে। যা ক্রমশই গোয়া উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম অর্থাৎ তীব্র থেকে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। বিধ্বংসী রূপ নিতে পারে এই সাইক্লোন বিপর্যয়।

আবহাওয়া অফিসের বুলেটিন অনুযায়ী, গত তিন ঘণ্টায় শক্তিশালী হয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। এটি পূর্ব মধ্য এবং দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগরে অবস্থান করছে। মঙ্গলবার মধ্যরাত আড়াইটে নাগাদ এটি গোয়া থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে ছিস। মুম্বই থেকে প্রায় ১০২০ কিলোমিটার এবং গুজরাটের পোরবন্দর থেরে ১০৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল বিপর্যয়।

আরব সাগরে উৎপন্ন এই সাইক্লোনটির নাম বিপর্যয় রেখেছে বাংলাদেশ। তবে কেবলমাত্র ভারতই নয়, এই সাইক্লোনের গভীর প্রভাব পড়তে পারে পাকিস্তানের করাচিতেও। বর্তমানে করাচি থেকে ১৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে বিপর্যয় ঘূর্ণিঝড়।

কোথায়-কবে আছড়ে পড়বে বিপর্যয়? বুধবার দিনভর ঝড়ো হাওয়া থাকবে মহারাষ্ট্র, গোয়া এবং গুজরাট উপলক্ষে। এদিন হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। আরব সাগরের পশ্চিম মধ্য এবং দক্ষিণ পূর্ব উপকূলে দমকা হাওয়া বইবে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই বিপর্যয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে।

বুধবার রাতের পর থেকে হাওয়ার গতিবেগ বাড়তে শুরু করবে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। ১১৫ থেকে ১২৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে। উত্তর কেরালা, কর্নাটক, গোয়া উপকূলে মূলত তাণ্ডব চালাবে এই বিপর্যয় ঘূর্ণিঝড়।

আবহাওয়াবিদদের একাংশের অনুমান ৮-৯ জুন এই সাইক্লোন আছড়ে পড়তে পারে। এর গতিবেগ হার মানাতে পারে মাত্র তিন সপ্তাহ আগে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মোকার গতিকেও। আমফান কিংবা ফণীর থেকেও বেশি গতিসম্পন্ন হতে পারে বিপর্যয়।

বিলম্বিত বর্ষা আর এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরেই চলতি মরশুমে বর্ষার প্রবেশ বিলম্বিত। সাধারণত প্রতি বছর ১ জুন কেরালায় বর্ষা প্রবেশ করে। কিন্তু, প্রথম মৌসম ভবন জানিয়েছিল, কেরালায় চারদিন দেরি করে বর্ষা প্রবেশ করবে ৪ জুন। তবে বাস্তবে ঘটল তার বিপরীত।

আরব সাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের জেরে কেরালায় মৌসুমী বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। ফলে কেরালায় নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও বর্ষা প্রবেশ করেনি। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের ফাঁড়া কাটছে, ততক্ষণ কেরালায় বর্ষা প্রবেশ করবে না বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *