জি বাংলার সারেগামাপা খ্যাত সংগীতশিল্পী নোবেলের জন্ম গোপালগঞ্জ শহরতলীর ঘোষচর দক্ষিণ পাড়া গ্রামে। সংগীতশিল্পী হিসেবে এপার-ওপার দুই বাংলায় খ্যাতি ছড়ালেও উশৃঙ্খল জীবনযাপন, মাদক আর নানা সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কের কারণে যেন হারিয়ে যাওয়ার পথে নোবেল।
অগ্রিম টাকা নিয়ে অনুষ্ঠানে না যাওয়ার ঘটনায় শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর প্রতিনিধি মো. সাফায়েত ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়। পরে গত ২০ মে ঢাকার ডেমরার বাসা থেকে নোবেলকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপরই মাদক, মারধরসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ এনে মুখ খোলেন নোবেলের সাবেক স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। সাবেক স্ত্রী সালসাবিলার পর এবার নোবেলের বিষয়ে মুখ খুললেন তার বাবা মোজাফফর হোসেন নান্নু।
তিনি বলেন, ‘নোবেল আটকের দিন ডিবি কার্যালয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সামনে নোবেল ও তার স্ত্রী সালসাবিলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তারা একসঙ্গে সংসার করবে কিনা। এ সময় নোবেল সংসার করতে চাইলেও, সালসাবিল সংসার করতে চায়নি। পরবর্তীতে হারুন সাহেব (ডিবি প্রধান) বললেন, তোমরা তোমাদের বিষয় সিদ্ধান্ত নাও, তোমরা সংসার করবা কি করবা না। এরপর সালসাবিলকে বেশকিছু গালমন্দও করেন তারা। এ সময় সালসাবিলকে তারা বলেন, ওতো (নোবেল) ওর বাবাকে সম্মান দিয়ে সালাম দিয়ে কথা বললো। কিন্তু তুমি তো সেই সালামটাও দিলা না। তোমার তো এখানে শ্বশুর-শাশুড়ি আছেন। পরে তাকে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয়, তোমরা সংসার করবা কি করবা না? এ সময় সালসাবিল আবারো বলছে, না আমি সংসার করবো না। এখন তাদের বিষয় আমার তো কিছু বলার নেই। এমনকি বিয়ের সময়ও ছিল না।’
এ সময় নোবেলকে ত্যাজ্য নয়, বরং অভিমান করে দূরে সরে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে কি আছে ত্যাজ্য করা যায়? এটি একটি হাস্যকর বিষয়। সন্তানের কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে মানুষ দূরে সরে থাকতে পারে। এটা হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেও এটা নেই। এটা ইসলামসম্মত না, বাংলাদেশের আইনসম্মতও না। তবে বাবা হিসেবে সন্তানের কাছ থেকে কষ্ট পাইলে দূরে সরে থাকার কথা বলে। এইটা আরকি।’
নোবেলের বাবা মোজাফফর হোসেন নান্নু আরো বলেন, ‘আমি প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ। তার যারা সমালোচনা করে, তারা তাকে ভালোবেসেই সমালোচনা করে। তার যখন ভালো সময় গেছে, সে যখন মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করছে, তার যখন এই শিল্পের সঙ্গে আন্তরিকতা ছিল, তখন মানুষ তাকে সেইভাবেই এপ্রিসিয়েড করছে। আবার সে যখন লাইনচ্যুত হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই মানুষ যারা তার ফ্যান ফলোয়ার, যারা তার ভালো চায়, সেখান থেকে যখন মানুষের আশা ভঙ্গ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ তার বিপক্ষে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে আমি তাদের স্বাধুবাদ জানাই এই কারণে যে, তাদের যেটা করা উচিত তারা সেটাই করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আবার যদি সে কোনোদিন সঠিক জায়গায় আসতে পারে, আমি মনে করি সবাই আবারও তার সম্ভাবনার কথাই বলবে। এই পিছনের ব্যর্থতার কথা আর বলবে না। নোবেল আবারো ফিরে আসবে এটা আমার বিশ্বাস। বাবা হিসেবে প্রত্যেকটা বাবার আশা থাকে, তার সন্তানরা এদেশের সেরা হোক, যে যেই লাইনে থাকে সে সেই লাইনের সর্বোচ্চ স্থানে থাকুক। আমারও বাবা হিসেবে সেটাই চাওয়া।’