ইমরান খানকে জামিন দিয়েছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। শুক্রবার আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় পুনরায় শুনানি শুরু হওয়ার পরপরই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধানকে দুই সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
আদালতে বিচার চলার সময় ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি তাকে আবার গ্রেফতার করা হয়, তবে পাকিস্তানজুড়ে অস্থিরতা শুরু হতে পারে। এ বিষয়টিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্কও করেছেন।
ইমরান খানের জামিনের বিষয়ে শুনানি করেছে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তাদের হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানের গ্রেফতার “অবৈধ এবং বেআইনি” বলে ঘোষণা করার এক দিন পরে এ শুনানি শুরু হয়।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের এ ডিভিশন বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব ও বিচারপতি সামান রাফাত ইমতিয়াজ।
এর আগে ইমরান খানকে মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর দু’দিন পরে এক ঘন্টার ঝড়ো ইনিংস খেলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি ইমরানকে এক ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। এরপর শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আল কাদির ট্রাস্ট মামলার জামিন আবেদনে হাজির থাকতে বলেন। এদিন জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হলেও জুমার নামাজের কারণে সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। নামাজ শেষে আবার শুরু হয়।
এর আগে ইমরান খান হাজির হন ইসলামাবাদ হাইকোর্টে। ২ নম্বর কোর্টরুমে এই আবেদনের শুনানি করেন বিচারপতি মিয়াগুল হাসান আওরঙ্গজেব ও বিচারপতি সামান রাফাত ইমতিয়াজ। এর আগে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে গ্রেপ্তারকে অবৈধ ও বেআইনি বলে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত তিন বিচারকের বেঞ্চ এদিন ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন।
অনলাইন ডন জানাচ্ছে, ইমরান খানের আইনজীবীরা মূল জামিন আবেদনের সঙ্গে আরও চারটি আবেদন দাখিল করেছেন। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ খারিজ করে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে ইসলামাবাদ হাইকোর্টকে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে নিবন্ধিত মামলাগুলোর বিস্তারিত তাকে জানাতে যেন আদালত কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা দেন। আজ শুক্রবার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘন্টা পরে শুনানি শুরু হয়।
মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়, আদালতের বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় কর্মকর্তারা কাজ করছিলেন বলে এই বিলম্ব। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটের সময় কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে পৌঁছান ইমরান খান। পরে স্থানীয় সময় দুপুর একটায় শুনানি শুরু হওয়ার পর পরই জুমার নামাজের জন্য শুনানি মুলতবি করা হয়। তবে জিও নিউজ বলেছেন, আদালতের ভিতরে ইসলামপন্থি স্লোগান দেয়ার কারণে আদালতের এজলাস থেকে চলে যান বিচারকরা।
টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে পুলিশ এবং রেঞ্জার্সদেরকে আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে। আদালতের গেটে দেয়া হয়েছে কাঁটাতার। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে বিপুল সংখ্যক আইনজীবীকে ইমরান খানের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ইসলামাবাদ পুলিশ বলেছে, আদালত চত্বর থেকে অপ্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ডিআইজি অপারেশন শাহজাদ বুখারি পুরো পরিস্থিত পর্যবেক্ষণ করছেন।