নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক ও মুক্তিযোদ্বা সোহেল রানা অভিনীত প্রথম সিনেমা মাসুদ রানা। গোয়েন্দা গল্প নিয়ে নির্মিত মাসুদ রানা সাড়া ফেলে সেই সময়ে। এ দেশের সিনেমায় যুক্ত হয় নতুন ধারা। এই সিনেমায় নায়িকা ছিলেন কবরী। সিনেমাটি পরিচালনা করেন সোহেল রানা। প্রথম নায়িকা কবরীকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সোহেল রানা।
জীবনের প্রথম সিনেমায় নায়ক হব এবং জীবনের প্রথম সিনেমা পরিচালনা করব সেজন্য অন্যরকম ভালোলাগা যেমন কাজ করছিল, পাশাপাশি উত্তেজনাও কম ছিল না। সে সময় কবরী খুব জনপ্রিয় নায়িকা। মাসুদ রানা তখন জনপ্রিয় উপন্যাস। আর আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করি। সিদ্বান্ত নিই কবরীকে নায়িকা করব। আরেকজন নায়িকা হিসেবে চূড়ান্ত করি অলিভিয়াকে। তারপর একদিন কবরীর কাছে যাই দেখা করতে। তিনি সময় দিলেন এবং সময় নিয়ে কথা হলো আমাদের। গল্প শুনে রাজি হলেন। আমরা শুটিং তারিখ চূড়ান্ত করলাম।
কবরীকে নিয়ে শুটিং শুরু হলো। আমার সিনেমার প্রথম নায়িকা কবরী খুব সহযোগিতা করলেন শুটিং করার সময়। এরপর মুক্তি পেল মাসুদ রানা। অসম্ভব হিট হলো। এ দেশে নতুন গল্পের সিনেমা সব শ্রেণির দর্শকদের মন জয় করল। নায়ক হিসেবে আমিও পরিচিত পেলাম। পরিচালক হিসেবেও আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল।
কবরী আজ নেই। একটি কথা জোর দিয়ে বলব, আমার ক্যারিয়ারের প্রথম নায়িকা সম্পর্কে; তিনি ছিলেন বাঙালির সত্যিকারের মিষ্টি মেয়ে। তিনি আমাদের নায়িকা। এ দেশের সবার নায়িকা। তার চেহারায় মিষ্টি একটি বিষয় ছিল। তাকে দেখেই মনে হয়েছে; কবরী দূরের কেউ নন, এ দেশের। তার চোখ-মুখ সব কথা বলে অভিনয়ের মতো করে। তিনি ছিলেন একজন পরিপূর্ণ শিল্পী।
সিনেমাকে শতভাগ ভালোবাসতেন কবরী। যার ফলে সিনেমা তাকে অনেক দিয়েছিল। নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ‘সুতরাং’ দিয়ে মন জয় করে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাঙালির মন জয় করে নেওয়া সাকসেসফুল নায়িকা তিনি। একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নায়িকা তিনি। আজ তিনি নেই, কিন্ত তার সিনেমা রয়ে গেছে। আরও বহু বছর থেকে যাবে যার সিনেমা।
উল্লেখ্য, বাংলা ছবির স্বর্ণালি যুগ বলতে যে সময়কে বোঝানো হয়, সেই সময়ের সফলতম নায়িকা ছিলেন কবরী। ভক্তরা যাকে ভালোবেসে ‘মিষ্টি মেয়ে’ ডাকতেন। আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) তার মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২১ সালের এই দিনে মারা গেছেন তিনি। মহামারি করোনায় যে কজন কিংবদন্তি তারকা বিদায় নিয়েছেন, কবরী তাদের অন্যতম।