নজর২৪, ঢাকা- ধর্ষকদের ‘পশু’ হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বলেছেন, নারীদের এই পশুর হাত থেকে বাঁচাতে সরকার সংশ্লিষ্ট আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ‘ধর্ষকরা হলো পশু, যে কারণে তারা তাদের অমানবিক প্রকৃতি দেখায়, এই কারণেই আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, আমরা আইন সংশোধন করেছি এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অন্তর্ভুক্ত করে আমরা মন্ত্রিসভায় সংশোধনীটি পাস করেছি।’
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস ২০২০- উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় সংশোধনী কার্যকর করার জন্য সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো উদ্ভূত যে কোনো সমস্যার মোকাবিলা করা এবং এটি সমাধান করা।’
সম্প্রতি দেশে অস্বাভাবিক হারে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মন্ত্রিসভা ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধানে সায় দেয়। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে সই করেছেন। আজ থেকেই দেশে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চালু হলো।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় আলোচিত ধর্ষণ প্রসঙ্গ ছাড়াও কোভিড-১৯, দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন সফলতা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত আসবে। এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। সেই জন্য আমাদের প্রস্তুতিও আছে। বিভিন্ন সময়ে সাফল্যের সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ড। এর মধ্য দিয়ে সাতশর বেশি নদী প্রবাহিত। এই জায়গায় দুর্যোগ মোকাবেলা করে জান-মাল বাঁচানো, মানুষকে সতর্ক রাখাটাই বড় কাজ। আমাদের ৫৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন। এর মধ্যে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরাও যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটা সময় দেশে অনেক অবহেলিত, অনগ্রসর মানুষ ছিল। সমাজে যাদের কোনো স্থান ছিল না। বলতে গেলে তারা ছিল অপাঙক্তেয়। আমরা কিন্তু তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদের ঠিকানা হয়েছে। আমরা হিজড়া থেকে শুরু করে সবাইকে স্বীকৃতি দিয়েছি। সমাজে এখন তাদের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। আপনারা জানেন, চা শ্রমিকদের অন্য দেশ থেকে আনা হয়েছিল। তাদের কোনো দেশ ছিল না, ঠিকানা ছিল না। বঙ্গবন্ধু তাদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন।’