সর্বশেষ সংবাদ

করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ, ​চাঁপাইনবাবগঞ্জে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার

নজর২৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেন ও বেড সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এই সঙ্কট দেখা দেয়।

 

সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ মে থেকে হঠাৎ করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ৫ম তলায় করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় অক্সিজেন ও বেডের অভাবে রোগী ও স্বজনদের হাহাকার।

 

রোগীর স্বজনরা বলছেন, করোনা ওয়ার্ডে অক্সিজেন নেই বলে বাইরে থেকে অক্সিজেন কিনতে বলছেন অথবা রাজশাহী বা ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন ডাক্তাররা। অক্সিজেন প্রয়োজন এমন অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। করোনা ওয়ার্ডে অনেক জায়গায় অপরিস্কার ও আবর্জনা পড়ে রয়েছে। আবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা রোগী হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছে না।

 

এরকার দলীয় চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. গোলাম রাব্বানী তাঁর ফেসবুকে অক্সিজেনের হাহাকারের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘এ মুহূর্তে একটা, শুধু একটা জিনিসের খুব প্রয়োজন। তা হলো- অক্সিজেন, অক্সিজেন এবং অক্সিজেন। অক্সিজেনের বড় অভাব। শুধু অভাব নয়, তীব্র হাহাকার।’

 

চিকিৎসকেরা জানান, ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে হাসপাতালের শয্যা ও অক্সিজেনের সংকট। অক্সিজেন প্রয়োজন- এমন অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছে। আবার অনেকে চলে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দেশে করোনার নতুন হটস্পট হয়ে ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, তাদের জেলায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৭২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬০০ জনের মতো শনাক্ত হয়েছে গত ঈদের পর থেকে। ঈদের আগে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ১৪ শতাংশ, সেখানে কয়েক দিনের মধ্যে বাড়তে বাড়তে ২৬ মে ৫৫ শতাংশ এবং তারপর ৬২ শতাংশে উঠেছিল। তবে পরে একটু কমেছে। কিন্তু রোববার ফের সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৪৫ শতাংশে।

 

সিভিল সার্জন আরও জানান, এ জেলায় এখন ৫৭৬ জন করোনা রোগী আছেন। তাদের মধ্যে জেলার তিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২২ জন। জেলা সদর হাসপাতালে ১৯ জন, শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন এবং গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন চিকিৎসাধীন আছেন। এর বাইরে সদর হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬ জন। অনেক রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর শিবগঞ্জ উপজেলার রোগীদের বড় অংশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন, যার খোঁজ তাদের কাছে আসছে না।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা ডা. নাহিদ ইসলাম মুন জানান, তাদের ওখানে করোনা রোগীদের জন্য ১৯টি সিট আছে। সেখানে এখন ১৯ জন রোগীই ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে একজন ভারতফেরত। তিনি বাদে বাকি সবাইকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তির মতো অনেক রোগী আসছে। কিন্তু সিট না থাকায় নতুন রোগী ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

অক্সিজেন সংকট নিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, তাদের এখানে ভর্তি রোগীদেরই ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে মোট ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। সেগুলোর মধ্যে ৩০টি ব্যবহার করা যায়, বাকি ৩০টি অক্সিজেন ভরে আনার জন্য পাঠাতে হয়। কিন্তু ঠিকমতো অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। স্পেকট্রা নামের একটি কোম্পানি মানিকগঞ্জ থেকে অক্সিজেন এনে সরবরাহ করে। তারা এখন ঠিকমতো দিতে পারছে না।

 

স্পেকট্রার পক্ষ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়াও রাজশাহী ও নাটোর এলাকায় অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে আছেন মীর আখতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, হঠাৎ করে রোগী বেড়ে যাওয়ায় অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা রোগীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সেখানে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ জনকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে

আরও পড়ুন

মহাসড়কে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করলেন ইউএনও

মো. সানোয়ার হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: তৈরিকৃত ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নূরুল আলম। সোমবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের...

শাকিব খান এখনো আমার স্বামী: বুবলী

ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী সবসময় আলোচনায় থাকেন ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। এবার একটি বেসরকারি চ্যানেলকে পারিবারিক অনকে কথাই বললেন অকপটেই। বর্তমানে শাকিব-বুবলীর সম্পর্ক দা কুমড়ার...

সেরা পঠিত