কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ মারা গেছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- কুয়েতের প্রবীণ আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

 

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুয়েতের ফাদার অব হিউম্যানিটি খ্যাত এ আমির। কুয়েতের বার্তা সংস্থা কুনার বরাতে এ খবর দিয়েছে দেশটির প্রথম সারির পত্রিকা আল আরাবিয়া।

 

আঞ্চলিক বিরোধের মূল মধ্যস্থতাকারী এবং মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরেও একজন শীর্ষস্থানীয় সমাজসেবক হিসাবে পরিচিতি ছিলেন শেখ আল সাবাহ। সৎ ভাই শেখ জাবের আল-সাবাহের মৃত্যুর পরে ২০০৬ সালে আরব উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতের আমির হিসেবে অভিষিক্ত হন তিনি।

 

বেশ অনেকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন কুয়েতের প্রবীণ এ আমির। গত জুলাইতে তিনি আমেরিকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে তার অস্ত্রোপচার হয়। সেসময় আমিরের অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ভার পান তারই বৈমাত্রেয় ভাই যুবরাজ শেখ নাওফ আল-আহমদ আল-সাবাহ।

 

সাবাহ’র মৃত্যুতে তার কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল সাবাহ’র মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত, শোকাহত। তার মৃত্যু কুয়েতের জনগণ, ইসলামি আরব বিশ্ব এবং বন্ধু দেশগুলোর জনগণের জন্য খুবই দুঃজনক।”

 

শেখ সাবাহ ২০০৬ সাল থেকে কুয়েতের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। আর প্রায় ৫০ বছর ধরে দেশটির পররাষ্ট্র নীতি তদারক করেছেন তিনি।

 

১৯৯০-৯১ সালে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসনকে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ভূমিকার জন্য সাবাহ-কে বলা হত ‘আরব কূটনীতির ডিন’।

 

তাছাড়া, আঞ্চলিক নানা বিরোধ নিস্পত্তিতেও মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করেছিলেন শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ।সম্প্রতি সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশ এবং কাতারের মধ্যকার কূটনৈতিক অচলবস্থা নিরসনে কাজ করেছিলেন তিনি।

 

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকেও কুয়েতকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন সাবাহ। যুদ্ধে জড়ানোর বদলে দেশটিতে মানবিক ত্রাণ সহায়তার জন্য বেশ কিছু দাতা সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন কুয়েতের এই আমির।

 

২০০৬ সালে কুয়েতের তৎকালীন আমির শেখ সাদ আল-আবদুল্লাহর পদত্যাগের পর জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ।

 

এর আগে তিনি কুয়েতের আরেক সাবেক আমির শেখ জাবের আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর অধীনে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

 

এরও আগে ১৯৬৩ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৯২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন শেখ সাবাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *