চেয়ারের একপাশে খচিত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত নাড়ানো ছবির দৃশ্য আর অপরপাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। মাঝখানে রয়েছে নৌকার ছবি। এতে লেখা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কন্ঠে উচ্চারিত সেই স্লোগান জয় বাংলা। আর চেয়ারের পুরো আকৃতি সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে। চেয়ারটি দেখলে বুঝা যায় তা যেন অগাধ ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। এমনি দৃষ্টিনন্দন একটি চেয়ার বানিয়েছেন কাঠমিস্ত্রী বিপিন চন্দ্র সরকার।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের সিংপাড়ার বাসিন্দা বিপিন চন্দ্র। ৩১ বছর ধরে কাঠমিস্ত্রী পেশার সাথে জড়িত তিনি। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের পর থেকে ভাবনা ছিল প্রধানমন্ত্রীর জন্য কিছু করার। শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সাধ্যের জায়গা থেকে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও নৌকা খচিত দৃষ্টিনন্দন এ চেয়ারটি।
বিষয়টি নিয়ে শুরুতে কয়েকজনের সাথে গল্প করলেও সকলে তাকে হতাশ করেন। সব হতাশা পেছনে ফেলে ঢাকা থেকে সেগুন কাঠ নিয়ে এসে চেয়ারের কাজ শুরু করেন তিনি। তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেছেন তিনি। অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার।
ব্যতিক্রমী দৃষ্টিনন্দন ও চোখ জুড়ানো চেয়ারটি দেখতে প্রতিনিয়ত ভীড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। মুগ্ধ হয়ে কাঠমিস্ত্রীর এমন উপহার নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি।
চেয়ারটি দেখতে আসা স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি গত তিন মাস থেকে দেখতেছি বিপিন দাদা খুব কষ্ট করে মনোযোগ দিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছেন। আমি মনে করেছিলাম কেও বানাতে দিয়েছে। পরে উনি বললো এটা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিবেন। একজন কাঠমিস্ত্রির এমন ভালোবাসার উপহার দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এটি গ্রহন করুক।
পাশের দোকানদার আমজাদ বলেন, এই চেয়ারটি বানানোর জন্য বিপিন দাদা ৩ মাস থেকে কারো সাথে ভালোভাবে কথাও বলার সময় পান নাই। দিন রাত খুব যত্ন করে নিপুন হাতের ছোয়ায় বানিয়েছেন তিনি এই চেয়ারটি। তার ইচ্ছাটি যেন পুরন হয় সে যেন প্রধানমন্ত্রীকে এই চেয়ারটি উপহার দিতে পারে আমরা এমটাই আশা করি।
চেয়ার দেখতে আসা মাহফুজ আলম চেয়ারটি দেখেই বলেন, অনেক সুন্দর চেয়ারটি। দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক যত্ন করে বানিয়েছেন তিনি চেয়ারটি। চেয়ারে করা নকশার কাজগুলোও অনেক নিপূনভাবে করা হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার মতই সুন্দর করে চেয়ারটি বানিয়েছেন তিনি।
চেয়ার এর কারিগর কাঠমিস্ত্রি বিপিন চন্দ্র সরকার এর কাছে চেয়ার কেন বানিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ নানাবিধ উন্নয়নে মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে চেয়ারটি গত ৩ মাস আগে বানানো শুরু করি। রাত দিন অনেক কষ্ট করে সুন্দর নিপুণভাবে চেয়ারটি বানিয়েছি আমি। অনেক যত্ন করে চেয়ারটি বানিয়েছি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য। চেয়ারটি কোনভাবে প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে গ্রহণ করলে পরিশ্রম স্বার্থকতা হবে আমার। এখন এই চেয়ারটি কিভাবে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠাবো সেটা বুঝতে পারছি না। সেজন্য আমি সকলের সহযোগিতা চাই। আমার মত কাঠমিস্ত্রির উপহার প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করলে আমার জীবনে আর চাওয়ার কিছ্ইু থাকবে না বলে বিপিন চন্দ্র।