২০১৯ সালে বেশ ধুমধাম করে বিয়ে করেছিলেন ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বিয়ের পর বেশ ভালোই যাচ্ছিল তাদের জীবনের নতুন অধ্যায়। তবে বিয়ের কিছু দিন যেতেই গুঞ্জন ছিল শবনম ফারিয়া ও হারুন অর রশীদ অপুর বিবাহ জীবন ভালো যাচ্ছে না।
মিডিয়া পাড়ার অলিগলি এ নিয়ে কানাকানি চলে। সে সময় ফারিয়া জানান তারা ভালো আছেন। কিন্তু ভালো থাকাটা অনেকেই সহ্য করতে না পেরে এ রকম গুজব ছড়াচ্ছেন। এর কয়েক মাস যেতেই সত্যি-সত্যিই তাদের সুখের সংসারে নেমে আসে অশান্তি, যা বিচ্ছেদের রূপ নেয়। আনন্দ-উল্লাসে দাম্পত্য জীবন শুরু করেছিলেন বটে। কিন্তু তা টিকেছিল ১ বছর ৯ মাস। এরপর বিচ্ছেদ এবং একে-অপরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ।
সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে বহু আগেই। এরপর বেশ একাকীত্ব যাপন করছিলেন অভিনেত্রী। সেই একাকীত্ব সময় বেশি দিন কাটাতে হয়নি তাকে। কিছুদিন পরই নতুন প্রেম-বিয়ের খবরে আলোচনায় আসেন অভিনেত্রী। এ নিয়ে সেসময় এক প্রকার মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন তিনি।
এরপর ২০২২ সালের মে মাসে জানা যায় তারও ২ মাস আগে বিয়ে করেছেন শবনম ফারিয়া। কিন্তু এবার আর ঢাকঢোল পেটালেন না। চুপিসারে পারিবারিক আয়োজনে সারলেন বিয়ে। ইনস্টাগ্রামে পারিবারিক মুহূর্তের বিভিন্ন ছবি পোস্ট করে আকারে-ইঙ্গিতে বিয়ের কথাটি বুঝিয়েছেন। তবে স্পষ্টবাক্যে বিয়ের কথা কখনোই বলেননি।
এদিকে, বেশ কিছু দিন ধরে শোবিজে কানাঘুষা চলছে, শবনম ফারিয়ার দ্বিতীয় সংসারটিও ভেঙে গেছে। অভিনেত্রীর সোশ্যাল হ্যান্ডেলে ‘বিরহ-বিচ্ছেদ’ অনুভবের নানা পোস্ট সেদিকে ইঙ্গিত করে। তবে বিয়ের মতো এই প্রসঙ্গেও পিনপতন নীরবতা পালন করছেন তিনি।
কিন্তু সোমবার (১ মে) রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ বোমা ফাটল। ফেসবুকে মোহাম্মদ জাহিন খান নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে শবনম ফারিয়াকে ট্যাগ করে লম্বা পোস্ট দেওয়া হয়। যেখানে অভিনেত্রীর দিকে ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগের ফিরিস্তি।
জাহিনের পোস্টের কয়েক ঘণ্টা আগেই ফারিয়া একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, কিছু মানুষ জীবনে আসে শিক্ষা হয়ে! ২০২১ ও ২০২২ ছিল ভুল মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কাছাকাছি যাওয়ার বছর। ২০২৩ ভালোর দিকে যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় ভুয়া লোকজন এমনিতেই দূরে চলে যাচ্ছে! কাছের মানুষ আরও কাছে আসছে। হালকা ও ভালো লাগছে। তরুণদের জন্য একটা উপদেশ, কেউ আপনার সঙ্গে যত ভালো হওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, যদি তার কোনও প্রকার মানসিক সমস্যা (উদ্বেগ ও বিষন্নতা ছাড়া) কিংবা কোনও মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকে, সবসময় তার থেকে দূরে থাকবে। তারা ক্ষতিকর। যতদিনে তুমি বুঝবে যে তারা ক্ষতিকর, সেটা অনেক দেরি হয়ে যাবে। সাবধান থাকো।
এবার নজর দেওয়া যাক জাহিন খান নামের ওই আইডির পোস্টে। সেখানে তিনি নিজেকে শবনম ফারিয়ার ‘এক্স হাসবেন্ড’ দাবি করেছেন। তার ভাষ্য, মাদকাসক্তি, মানসিক রোগ নিয়ে শবনম ফারিয়ার যে পোস্ট, সেটা আমাকে নিয়ে; আমি তার এক্স হাসবেন্ড। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি এক পক্ষের কথা শুনে বিচার না করে আমার কথাগুলো শোনার। আমি যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভালোই ছিলাম। এরপর আমি বাংলাদেশে আসি এবং শবনম ফারিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আমি একটা অপরাধে গ্রেপ্তার হই, যেটা আসলে আমি করিনি। বন্ধুরা আমাকে ওই মামলায় যুক্ত করে ফেলে। কয়েক মাস কারাগারে থাকার পর আমি জামিন পাই। বলতে ভুলে গেছি, আমি গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই আমরা বিয়ে করেছিলাম।
জাহিন তার পোস্টে আরও লিখেছেন, যখন আমি জেল থেকে বের হয়ে আসি, তখন থেকেই ফারিয়ার আচরণে পরিবর্তন দেখতে পারি। সে রীতিমতো আমাকে গালাগাল ও মারধর করত! একটা পর্যায়ে ব্যাপারটা এত বাজে হয়ে যায় যে, আমি কাউকে বলতেও পারিনি। পরবর্তীতে আমি জানতে পারি যে, তার (ফারিয়া) আগের বিয়েটাও এমনই ছিল। এমন জীবন আমি চাইনি, এমন বিয়ে-ভালোবাসা আমি চাইনি, যেখানে একে-অপরের প্রতি কোনও সম্মানবোধ থাকবে না।
বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন জানিয়ে জাহিন বলেন, দেশত্যাগ করা ছাড়া আমার কোনও পথ ছিল না। প্রত্যেকটা উপায়ে সে আমার ক্ষতি করতে চেয়েছিল। এমনকি তার প্রভাবশালী বন্ধুদের দিয়ে আমাকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। আমাদের সম্পর্ক চলাকালীন বিষয় নিয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না। কিন্তু একজন পুরুষের গল্প সবসময় আড়ালেই থেকে যায়।
তবে শবনম ফারিয়ার দাবি, এটা ফেক অ্যাকাউন্ট। জাহিন খান নয়, তিনি যাকে বিয়ে করেছেন তার নাম জাহিন রহমান। তবে বিয়ে, সংসার নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি এ অভিনেত্রী।
২০২২ সালের মে মাসে ঈদ উৎসবে জাহিনসহ পারিবারিক ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে বিয়ের ইঙ্গিত দেন ফারিয়া। তবে সেখানে বরের নাম-পরিচয় উল্লেখ করেননি।