নিজস্ব প্রতিবেদক, নজর২৪: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গভীর রাতে বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রশ্ন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী। শনিবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টার দিকে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
ওই ছাত্রী ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আটকের পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহীম, শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনসহ পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী তার বান্ধবী ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ আরও দুই ছেলে বন্ধুর সহায়তায় এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরি করার জন্য শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে।
পরে সে আগে থেকে বানানো তালার চাবি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে একেক করে কয়েকটি আলমারির তালা ভাঙতে থাকে। এ সময় পাশের রুমে থাকা নাইটগার্ড ফজলু তালা ভাঙার শব্দ শুনে ভেতরে গিয়ে ওই ছাত্রীর হাতে ছুরি দেখতে পান।
এ সময় ওই ছাত্রী নাইটগার্ডকে ফাঁসানোর ভয় দেখায়। একপর্যায়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাসে নাইটগার্ড বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের বাসায় নিয়ে যান। পরে সেখানে মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত বলে। পরে মানবিক বিবেচনায় রাতেই প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রীর মা ও ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনকে বিষয়টি জানালে তারা বিদ্যালয়ে এসে মেয়েটিকে নিয়ে যান।
ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লাল মাহমুদ বলেন, প্রশ্নপত্র চুরি করে বিক্রির জন্য ছেলেদের পোশাক পড়ে গভীর রাতে বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে ওই ছাত্রী। তবে পূর্বেই ফিল্মি স্টাইলে বিদ্যালয়ের তালা-চাবির ছবি তুলে তালা খোলার জন্য আলাদা চাবি বানিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে সে। পরে কক্ষের ভেতরে কয়েকটি আলমারির তালা নষ্ট করে। পরে নাইটগার্ড শব্দ পেয়ে ভেতরে গিয়ে তাকে ছুরিসহ হাতেনাতে আটক করে। সে আমাদের জানিয়েছে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্ন চুরি করে বন্ধুদের কাছে বিক্রি করবে। পরে মানবিক কারণে তাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তার মাকে জানানো হলে তারা বিদ্যালয়ের এসে মেয়েকে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এই কাজে জড়িত থাকার দায়ে আমাদের বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহীউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রশ্ন চুরির ঘটনা জানি না। জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।