গরিবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ডা. এজাজ। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সরকারি দায়িত্ব পালন করে গাজীপুরে নিজের চেম্বারে সেখানকার মানুষের চিকিৎসা দেন এজাজ। অসহায় গরিব মানুষদের চিকিৎসা করতে খুবই অল্প পরিমাণ টাকা ভিজিট নেন তিনি।
অন্যদিকে অভিনয়ে তিনি এতোটাই জনপ্রিয় যে, কোনো নাটক সিনেমায় তার উপস্থিতি মানেই বাড়তি বিনোদন। চিকিৎসক পেশা ঠিক রেখেই নিয়মিত অভিনয় করেন এই অভিনেতা। নিজের অভিনয় দিয়ে মানুষের মন জয় করেছেন অনেক আগেই। চিকিৎসক হিসেবেও মানুষের হৃদয়ে রয়ে গেছেন প্রিয় মানুষ হিসেবে।
চিকিৎসা পেশা ও অভিনয় দুটো একই সঙ্গে সামলে চলছেন ডা. এজাজুল ইসলাম। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি সব সময় তিনটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকি- চেম্বার, অভিনয় ও সংসার। মাসে ১৮ দিন রাখি চেম্বারের জন্য। বাকি ১২ দিন করি শুটিং। ২১-২২ ঘণ্টা কাজ করি; মাত্র ২-৩ ঘণ্টা ঘুমাই। কম ঘুম যদিও ক্ষতিকর।
পেশায় চিকিৎসক বলে হুমায়ূন আহমেদ শুটিংয়ের সময় আমার সময়সূচিকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন। খেয়াল রেখেছেন নাটক করতে গিয়ে যেন কোনো রোগীর ক্ষতি না হয়। আর সে কারণেই রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে অভিনয় চালিয়ে গেছি। আর সব নির্মাতাকেই বলি, ভাই আমার সময় কিন্তু কম। আমাকে নিলে আপনার এই ঝামেলা পোহাতে হবে। ফ্রি সময়ের মধ্যে কাজটুকু শেষ করে ফেলতে হবে। তারা কিন্তু আমার প্রতি এই মমতাটুকু দেখান।
এজাজ বলেন, পেশার সঙ্গে আমি অভিনয়টাকে খুবই এনজয় করি। পেশা আর নেশায় তাই কখনো সমস্যা হয়নি। আর সামান্য যেটুকু অভিনেতা হয়েছি, সেটি করতে পারতাম না, যদি স্যারের সঙ্গে কাজ না করতাম। তবে যদি কোনোটিকে ছাড়তে বলা হয় তাহলে বোধ হয় অভিনয় ছেড়ে দেব।
তিনি বলেন, আমি আগে ডাক্তার, পরে অভিনেতা। একবার ১৫ দিন অসুস্থ হয়েছিলাম। রোগীরা অনেক দোয়া করেছিল। তাদের ভালোবাসাটা অন্যরকম। ‘শ্যামল ছায়া’র শুটিং যখন করতাম, প্রতিদিন রোগীরা খাবার নিয়ে আসত। একবার হুমায়ুন স্যার বললেন, ‘ও এত খাবার পায় কোথা থেকে।’ তখন অন্যরা বলেছিলেন, ‘তার রোগীরা খাবার দিয়ে যায়।’ এটাই ভালোবাসা।’