বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বিনোদন মিডিয়ায় চরিত্র অনুযায়ী অভিনয় করে হাতেগোনা যে ক’জন অভিনয়শিল্পী আকাশচুম্বী দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ফজলুর রহমান বাবু অন্যতম। একজন অভিনয়শিল্পীকে যেভাবে পর্যায়ক্রমে অভিনয়ের দীক্ষা নিয়ে বিকশিত হতে হয়, তিনি ঠিক সেই পথ দিয়েই এগিয়ে এসেছেন।
আজকের এই অবস্থানে আসার জন্য অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি নিতে হয়েছিল ঝুঁকিও। অনেকেই হয়ত জানেন না যে বাবু কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন ব্যাংকার হিসেবে। কিন্তু অভিনয়ের প্রতি অদম্য টান এবং ভালোবাসার কারণে তিনি ব্যাংকের চাকরি থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে থাকেন।
পরিবারের সদস্যদের অনেকের আপত্তি সত্ত্বেও একসময় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে পুরোপুরি অভিনয়ে আত্মনিয়োগ করেন। ৫ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ফজলুর রহমান বাবু সিনেমায় প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন মৌসুমীর বিপরীতে।
‘ভাঙন’ সিনেমাটি আজ ১১ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে। ‘ভাঙন’ ছাড়াও নতুন একটি সিনেমায় অভিনয় করছেন গুণী এই অভিনেতা। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে একাধিক সিনেমা। এছাড়া ‘দুই দিনের দুনিয়া’ ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করে সম্প্রতি প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।
বাবু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভাঙন ব্যতিক্রমী গল্পের সিনেমা। ঢাকা শহরের ছিন্নমূল মানুষের জীবন নিয়ে এই সিনেমার গল্প। আমি নিজেও ছিন্নমূল একজন মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেছি। সিনেমায় আমি বাঁশি বাজিয়ে জীবনযাপন করি। আমার মতো অনেক ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে একসময় পরিচয় ঘটে। এইসব ছিন্নমূল মানুষের জীবনের দুঃখ, কষ্ট ও স্বপ্নের সিনেমা ‘ভাঙন’।
তিনি বলেন, মৌসুমী ও আমি প্রথমবার কোনো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছি। সহশিল্পী হিসেবে মৌসুমী ভীষণ ভালো। একজন পেশাদার অভিনেত্রী তিনি। ‘ভাঙন’ সিনেমায় আমরা পরস্পরকে পছন্দ করি। ভালোবাসি তো বটেই। আমার মতো তিনিও একজন ছিন্নমূল মানুষ। আমরা দুজনে এফডিসিতে শুটিং করেছি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেলস্টেশনে শুটিং করেছি। তবে, সিনেমায় দুজনে একসঙ্গে প্রথমবার অভিনয় করলেও নাটকে অভিনয় করেছি আরও আগে।
নাটক ও সিনেমায় নানান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কোনো অতৃপ্তি কাজ করে কি? জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, শিল্পী কখনো তৃপ্ত হন না। শিল্পীর আকাঙ্ক্ষা থেকেই যায়। আমিও একজন শিল্পী। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্পে নিজেকে দেখতে পাই। সেইসঙ্গে নতুন নতুন চরিত্রেও নিজেকে তুলে ধরি। একটি চরিত্র শেষ করার পর আবার নতুন চরিত্রে প্রবেশ করি। নতুন চরিত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে পথ চলি। মাথার মধ্যে ভাবনা কাজ করে, পরের চরিত্রটি আরও ভালো করতে হবে। আকাঙ্ক্ষা থেকেই যায় ভেতরে। শিল্প বুঝি এমনই। পরিপূর্ণ তৃপ্ত হওয়া যায় না।