ভাঙন ও দেশান্তর নামের দুটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার। দুটিতেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী মৌসুমী। দুটি সিনেমা নিয়েই সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে হচ্ছে তার। এমন অবস্থায় কোন সিনেমার কথা রেখে কোনটা বলবেন, এ নিয়ে বেশ বিপদেই পড়েছেন অভিনেত্রী।
মঙ্গলবার রাতে মীর্জা সাখাওয়াত হোসেন পরিচালিত সরকারি অনুদানের সিনেমা ভাঙন নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মৌসুমী।
দুটি সিনেমা একসঙ্গে মুক্তির বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুটি সিনেমার মধ্যে একটা ৪ নভেম্বর আরেকটা আসার কথা ছিল ১১ নভেম্বর। মূলত দেশান্তর সিনেমাটাই ১১ তারিখে ডেট ছিল। এর সঙ্গে ভাঙন সিনেমাটা যুক্ত হয়ে গেল। ভাঙনকে ৪ তারিখ থেকে সড়িয়ে দেয়া হলো।
‘এখন দুটি সিনেমাই একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে, এটা কাকতালিয়ভাবে হয়ে গেছে। একসঙ্গে না হয়ে আলাদা হলেও ভালো হতো। আমি এখন কোনটা রেখে কোনটা বলব, দুইটা ছবি আমার কাছে প্রিয়, দুইটা সিনেমার প্রতিই আমার মায়া সমানভাবে কাজ করছে। দুটি সিনেমাই ভালো গল্পের।’
ভাঙনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? মৌসুমী বললেন, খোলা জায়গায় শুটিং করতে গিয়ে ভক্তদের ভিড়ের কারণে বেগ পেতে হয়েছে।
“পরিচিত মুখ নিয়ে কাজ করতে পারলে পরিচালকের ভালো লাগে। এতে পরিচালকের অনেক সুবিধা হয়। সহজে প্রচার হয়। কিন্তু এমন আউটডোরে পরিচিত মুখ নিয়ে শুটিং করাটা কঠিন। মানুষের ভিড়ে আমরা ঠিকমত শুটিংই করতে পারিনি। এত ভিড় হয়েছিল যে দর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পরিচালকের অনেক লস হয়েছে এজন্য।
“কারণ ট্রেনের টাইমিং বুঝে আমাদের শট ধরতে হয়েছে। দেখা যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সময় সেটে মানুষ ঢুকে শটটা নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আবার ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। এসব কারণে এক দিনের জায়গায় তিন দিন শুটিং করতে হয়েছে।”
ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে মিশে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও সংবাদ সম্মেলনে বললেন এ নায়িকা।
“আমরা দুই-তিনটা রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুটিং করেছি। প্লাটফর্মে যারা কাজ করেন, তাদের অনেক আগ্রহ ছিল আমাদের নিয়ে। যেহেতু তাদেরই জীবনের গল্প। তারা আমাদের আপন ভাবছিল। আমরাও তাদের আপন করে নিতে পেরেছিলাম। ছবিটা দেখার সময় সাধারণ মানুষদের ভালোলাগা কাজ করবে।”
এখনকার দর্শকরা সিনেমার কারিগরি বিষয়গুলোতেও নজর রাখেন। সেট ডিজাইন, কালার কারেকশন, মেকআপ, গেটআপ ইত্যাদি বিষয়ে ভাঙন টিম কতটা সচেতন ছিল?
মৌসুমী বললেন, “আমার কাছে মনে হয়েছে শুটিংয়ের সময় সাখাওয়াৎ ভাই অসুস্থ ছিলেন, তারপরও সেট ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে উনি যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন। এখানে প্রাণ রায় কাজ করেছেন। তার শিল্পবোধ সম্পর্কে সবারই ধারণা আছে। তিনি অত্যন্ত গুণী একজন শিল্পী।
“আমরা সবাই মিলে ভালোটা করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া সাখাওয়াৎ ভাই নির্মাতা, তার উপরে আমাদের কথা থাকতে পারে না। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। অনুদানের ছবি হিসেবে অনেক বেশিই আয়োজন করেছেন তিনি।”
মৌসুমী ছাড়াও ভাঙনে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মির্জা আফরিন, প্রাণ রায়, সৃষ্টি মির্জা, রাশেদা চৌধুরী, খলিলুর রহমান কাদেরী, হিমেল রাজ, আনোয়ার সিরাজী, সঞ্জয় রাজ, মিশু চৌধুরী, মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন। আগামী ১১ নভেম্বর ৩০টি হলে মুক্তি পাচ্ছে ভাঙন।