আমরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে আসিনি: সাকিব

আশার বেলুনে ফু দেওয়া সাকিব আল হাসানের স্বভাব নয়। তিনি বাস্তবতা মেনে চলেন, বাস্তবে বাস করেন। কখনও কখনও নির্মম সত্য নির্বিকারে বলে দেন। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ওই পরিপক্কতা টাইগার অধিনায়কের এসেছে। ভক্ত-সমর্থকদেরও যেন পরিপক্ক হওয়ার বার্তা দিয়ে যান তিনি।

বুধবার সুপার টুয়েলভে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। অথচ সাকিব বলছেন, জিতলে তা হবে অঘটন। মিথ্যা তো তিনি বলেননি। এও বলেছেন, বিশ্বকাপে অঘটন তো অহরহ ঘটছে। তারা কেন পারবেন না।

ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘ভারত বিশ্বকাপের ফেবারিট। ওরা বিশ্বকাপ জিততে এসেছে। আমরা ফেবারিট নয়। এখানে আমরা বিশ্বকাপও জিততে আসিনি। শেষ দুই ম্যাচের একটি জিতলেও সেটা আপসেট হিসেবে দেখা হবে। খুব খুশি হবো যদি অঘটনটা ঘটাতে পারি।’

কাগজে-কলমে ভারত ফেবারিট দল। তাদের বোলিং লাইন আপ খুবই শক্তিশালী। প্রতি ম্যাচেই তারা প্রতিপক্ষকে ১৬০ রানের মধ্যে আটকেছে। সাকিব জানান, তাদের বিপক্ষে ব্যাটিং করা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে। অ্যাডিলেডে ভারত অনেক ম্যাচ খেলেছে। ওই দিক থেকেও তারা এগিয়ে থাকবে।

বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচের ফল নির্ধারণ হচ্ছে শেষ দুই ওভারে। ওই যায়গায় বাংলাদেশ দল আগে অতিরিক্ত চাপ নিয়ে ম্যাচ হারত। নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই চাপ সামাল দিয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। সাকিব যেটাকে উন্নতি হিসেবে দেখছেন। সামনেও নার্ভ ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে জানালেন।

তিনি বলেন, ‘এখানে নার্ভ ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি। আমি এখন পর্যন্ত দলের পারফরম্যান্সে খুশি। বাকি দুই ম্যাচেও ভালো খেলতে চাই। কঠিন কন্ডিশনে ভিন্ন দুই আক্রমণের বিপক্ষে যা কঠিন হবে। আমি বিশ্বাস করি ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করার সামর্থ্য আছে আমাদের।’

সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের শেষ দুটি ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। উপমহাদেশের এই দুই প্রতিবেশী দলের ক্রিকেটীয় শক্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন চলে না। সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে এ দুটি বড় দলই বেশ চাপে আছে। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশ কিংবা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভারত হেরে গেলে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণে অনেক যদি-কিন্তুর মধ্যে পড়তে হবে। পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ। সেমিফাইনালে ওঠার নাটাই পাকিস্তানের হাতে নেই। শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও অন্য ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করতে হবে বাবর আজমদের।

পরিস্থিতি যখন এমন, তখন বাংলাদেশ দল কী ভাবছে? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে দুটি জয় তুলে নিয়ে এরই মধ্যে এই সংস্করণে নিজেদের সেরা বিশ্বকাপের দেখা পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। সাকিবদের পরবর্তী লক্ষ্যটা কী?

বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘পরবর্তী লক্ষ্য হলো, দুটো ম্যাচ খুব ভালোভাবে খেলা। দুটো ম্যাচের কোনো ম্যাচও যদি জিততে পারি, সেটা আপসেট (অঘটন) হিসেবে গণ্য হবে। সেই আপসেটটা করতে পারলে আমরা খুশি হব। না করতে পারলে বেশি কিছু বলার নেই। দুই দলই কাগজে-কলমে আমাদের চেয়ে অবশ্যই ভালো। তবে আমরা যদি ভালো খেলি, আমাদের যদি দিন থাকে, তাহলে কেন পারব না। এই বিশ্বকাপেই আমরা দেখেছি, আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে, জিম্বাবুয়ে পাকিস্তানকে হারিয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *