ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা আহমেদ শরীফ। ১৯৭২ সাল থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি আট শতাধিক বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। খলনায়ক হিসেবে সফল হলেও অনেক চলচ্চিত্রে ভিন্ন চরিত্রেও অভিনয় করে দর্শক মুগ্ধ করেছেন তিনি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি।
আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেই দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে একান্ত আলাপে জীবনের নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন এ অভিনেতা। যেখানে উঠে এসেছে তার বর্ণিল ক্যারিয়ার, প্রবাস জীবন, প্রয়াত সহকর্মীদের হারানোর ব্যথা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব-নিকেশসহ অজানা অনেক তথ্য।
শুরুতেই শৈশব-কৈশরের স্মৃতিচারণ করে আহমেদ শরীফ বলেন, মানুষের জীবনের সবচেয়ে মধুর ও সুন্দর সময় ছোটবেলা। যে ছোটবেলায় কোনো পাপ নেই, অন্যায় নেই, ভালো-মন্দের বালাই নেই; সেই ছোটবেলা আর ফিরে আসবে না আমার। আমার মতে, ছোটবেলা মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।
আমেরিকায় কিভাবে দিন পার করেন সে প্রসঙ্গে তিনি জানান, যখন সিনেমার জগতে ছিলাম, তখন সকাল ৮টা বা ৯টায় এফডিসিতে যাওয়ার উদ্দেশে বের হতাম। বাসায় ফিরতে রাত ১টা বা দেড়টা বেজে যেত। কখন সূর্য উঠতো, কখন ডুবতো কিছুই বুঝতাম না; কাজের মধ্যে ডুবে থাকতাম। খুবই ব্যস্ততায় সময় কাটতো। বিদেশে গিয়ে সেই ব্যস্ততা থেমে গেছে। প্রথমদিকে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হয়েছে, এখনও খানিকটা হয়। আমেরিকায় আমার একেবারেই কোনো কাজ নেই। সময় কাটাতে নিয়মিত পত্রিকা পড়ি, টিভি দেখি আর বই পড়ি।
আহমেদ শরীফ যোগ করেন, যে কথাটি বলতে আমার সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে তা হলো, আমি যখন সময় কাটানোর কষ্ট অনুভব করছিলাম, সে সময় আল্লাহ আমাকে একটি পথ দেখিয়েছেন। আমি কোরআন শরীফ পড়া শুরু করেছি। আমার মনে হলো, এখন তো অনেক সময় আছে, একটু বাংলা কোরআন শরীফ পড়িতো, দেখি কি বলেছেন আল্লাহতায়ালা। আমি এতটাই মুগ্ধ হয়েছি যে, একদিনেই ১০ পারা পড়া শেষ করেছি। সেটি আমার প্রচণ্ড ভালো লাগতে শুরু করলো এবং অনেক কিছুই শিখতে পারলাম।
অনুরাগীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি ধর্মভীরু নই, ধর্ম পরায়ণ। সবাইকে অনুরোধ করবো, আপনারা অবশ্যই কোরআন শরীফ পড়ুন। নিজের আত্মার শান্তি পাবেন, অনেককিছু জানবেন।